আমি এক জাদুকর কে চিনি। না, ভেলকি তিনি দেখান না! মানে দেখাতেই পারেন, কিন্তু দেখাবেন কেন ? তাহলে তো যা মিথ্যা যা অলীক তাকে প্রশ্রয় দেয়া হয়ে যাবে! তিনি এসব পছন্দ করেন না। কি বলছেন ? জাদুকর অথচ জাদু দেখান না ? তাহলে তো…..!! আজ্ঞে না !! তিনি আর কেউ নন। তিনি তো সেই, যিনি ছদ্মবেশে এসেছিলেন। লক্ষীপতি তিনি! তিনি বৈকুন্ঠের নাথ! কিন্তু এলেন চুপিসারে গরীব মা বাবার ঘরে। কত লীলা দেখালেন, কত কষ্ট সহ্য করলেন।
“অবতার হয়েও কেন এত কষ্ট ?? তাহলে অবতার নয় !” লোকে বলল!
তাঁর ভক্তরা রেগে গেল! “কি ! এত বড় সাহস ! ঠাকুরকে এসব বলা !!” ভক্তরা বললেন! তিনি বললেন ‘ওরে, বেনোজল সব বেরিয়ে যাক! ঠিক ঠিক ভক্তরা ঠিক চিনবে’!!
হ্যাঁ, রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের কথাই বলছিলাম। এই পাগল ঠাকুর এলেন এক যুগসন্ধিক্ষণে! তাঁকে যে ধর্মসংস্থাপন করতে আসতেই হত ! হাজার হাজার ভক্ত! ডেপুটি মেজিস্ট্রেট থেকে বড় ব্যবসায়ী, বঙ্কিম থেকে বিদ্যাসাগর, কেশব সেন থেকে বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী — সবাই ঠাকুরের চরণতলে এসে ধন্য হয়েছেন! এহেন ঠাকুর চারজন দুর্দমনীয় ব্যক্তিকে চরম নাস্তিক থেকে আস্তিকে পরিণত করলেন। খাদের কিনারায় চলে যাওয়া চারজন মানুষ! নিজের স্বমূর্তি দেখালেন তাঁদের!
শ্রী রামকৃষ্ণ কথামৃত – এর রচয়িতা শ্রীম
ADVERTISEMENT
প্রথমজন রামকৃষ্ণ জীবনীকার, শ্রীম অর্থাৎ মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত। প্রথম জীবনে বিবাহের পর তিনি সাংসারিক অশান্তির শিকার হন! অশান্তি একদিন চরমে উঠলে ইনি একদিন নিজের স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে গঙ্গায় ডুবে আত্মহত্যা করবেন বলে ঠিক করেন। তাঁর মনের অবস্থা দেখে তাঁর এক বন্ধু পরামর্শ দেন দক্ষিণেশ্বরের ঠাকুরের কাছে একবার যেতে। নিতান্ত অনিচ্ছাসত্বেও শ্রীম দক্ষিণেশ্বরে গেলেন। গিয়ে দেখলেন একজন রোগা-ভোগা মানুষ একটি তক্তপোষের উপর বসে কিছু বলছেন তাঁর ভক্তদের আর সবাই মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনছে।
শ্রীম একটি কাজের মহিলাকে জিজ্ঞাসা করলেন যে ওই ব্যক্তি যে এত ধর্মপদেশ দিচ্ছেন, নিশ্চই তিনি অনেক লেখাপড়া করেছেন।
সেই মহিলা শ্রীম কে বলেছিলেন “আর পড়াশোনা! বেদবেদান্ত সব ওঁর মুখে”!
তখন শ্রীম জানতেন পড়াশোনা করলেই আসল জ্ঞান হয় । ঠাকুর তাঁকে জ্ঞান ও অজ্ঞানের পার্থক্য বোঝালেন!
বললেন,”ঈশ্বরকে জানাই জ্ঞান, আর বাকি সব অজ্ঞান”।
এর পরের ঘটনা ইতিহাস। কোথায় ভেসে গেল শ্রীমর আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত! তিনি এবং তাঁর স্ত্রী ঠাকুরের পরম ভক্তে পরিণত হলেন । এরপর থেকে শ্রীম কে সর্বদা হাতে একটা খাতা ও কলম নিয়ে ঘুরতে দেখা যেত। ঠাকুরের মুখনিঃসৃত সমস্ত বাণী লিপিবদ্ধ করেছেন মৃত্যুর আগের মুহূর্ত পর্যন্ত। তাঁর কলম থেকেই আমরা পেলাম ‘শ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত’! বেঁচে ছিলেন ঠাকুরের দেহত্যাগ এর অনেক বছর পর পর্যন্ত! নিজের লেখার কাজ শেষ করে পাড়ি দেন চিরনিদ্রার দেশে। লিখলেন ‘শ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত’। তিনিই রামকৃষ্ণদেবের প্রথম জীবনীকার।
স্বামী বিবেকানন্দ
দ্বিতীয়জন ভুবনবিখ্যাত। পূর্বনাম নরেন্দ্রনাথ দত্ত। বড়লোক পিতার বড় সন্তান, মেধাবী, প্রখর যুক্তিবাদী! প্রিয় খেলা ধ্যান! মগ্ন হয়ে যান নির্লিপ্ত হয়ে যান ধ্যানে বসে। ঈশ্বর মানেন, কিন্তু ব্রাহ্ম মতে বিশ্বাসী । তাঁর বিশ্বাস, ঈশ্বর নিরাকার! যান দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্রাহ্মসভায়। নিজে চোখে না দেখে কিচ্ছুটি বিশ্বাস করেন না। যাকে পান তাকে জিজ্ঞাসা করেন তিনি ঈশ্বর কে নিজে চোখে দেখেছেন কিনা ? কেউ সদুত্তর দিতে পারেন না । ক্রমে তাঁর বিশ্বাস হচ্ছে ঈশ্বর বলে কিছু নেই। দুর্দান্ত গান করেন। পাড়ায় একদিন ডাক পড়ল ! একজন সাধু এসেছেন পাড়ায় এক বাড়িতে, তিনি গান ভালবাসেন। নরেন্দ্র যদি একটি গান তাঁকে গেয়ে শোনান। রাজি হয়ে গেলেন। সেই মাহেন্দ্রক্ষণ উপস্থিত। ঠাকুর তো তাঁকে দেখেই চিনেছেন। গান শুনে আসতে বললেন দক্ষিণেশ্বরে। কিন্তু নরেন্দ্রের মনে হল লোকটা হয়ত বা পাগল। অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেন। পাত্তা দিলেন না বিশেষ। কিন্তু তিনি যে মন্দিরে বসে নরেন্দ্রকে ক্রমাগত টানছেন। সেই টান উপেক্ষা করতে না পেরে নরেন্দ্র গেলেন তাঁর কাছে একদিন।
সটান প্রশ্ন, “ঈশ্বরকে দেখেছেন ? ঈশ্বর আছেন ?”
ঠাকুর স্মিত হেসে বললেন, “দেখেছি । এই তোকে যেমন দেখছি, তার থেকেও স্পষ্ট তাঁরে দেখেছি !”
নরেন্দ্র অবাক। কি জোর ওই দুটি কথায়! এরকম জোর তো আর কারও গলায় পান নি! আরো জানলেন ঠাকুরের মুখ থেকে যে তিনি নাকি নররূপী শিব। জীবের কল্যাণের জন্য আবার দেহধারণ করেছেন। ঠাকুর নিজে হাতে খাইয়ে দিলেন তাঁকে। এক বিস্ময় ও অবিশ্বাসের দোলাচলে দুলতে দুলতে নরেন্দ্র বাড়ি এলেন।
এরপর প্রায় যেতে লাগলেন দক্ষিণেশ্বরে! ঠাকুর টাকাকড়ি ছুঁতে পারতেন না। ধাতুর তৈরী কোনো বস্তু ছুঁলে তাঁর শ্রীঅঙ্গ বেঁকে যেত। এই কথা নরেন্দ্রের কানে গেল! কিন্তু তিনিও সিমলের নরেন দত্ত। যাচাই করবেন এ তথ্য সত্য কিনা। একদিন ঠাকুর স্নানে গেছেন। সেই অবসরে তাঁর বিছানার তলায় নরেন্দ্র রেখে দিলেন একটি মুদ্রা। কেউ দেখে নি , কেউ জানে না। “দেখি এবার, তুমি সত্যি না ভন্ড”, নরেন্দ্র হাসলেন এ কথা ভেবে। ঠাকুর স্নান করে এসে বিছানায় বসতে গিয়ে যেন বিছের কামড় খেলেন। “জ্বলে গেল , জ্বলে গেল” বলতে বলতে সটান গিয়ে গঙ্গায় ঝাঁপ দিলেন।
নরেন্দ্র বিস্ময়ে হতবাক। কিছুক্ষণ পর ঠাকুরকে জানালেন যে তিনিই এই কান্ডের জন্য দায়ী। ঠাকুর যেন তাঁকে ক্ষমা করে দেন। ঠাকুর স্মিত হাসলেন, অপার রহস্যে ভরা কণ্ঠে বললেন, “বেশ করেছিস, যাচাই করে নিবি! যার তার মুখে শোনা কথা কক্ষনো মানবি নে”। এই হলেন ঠাকুর। নরেন্দ্রের কোথায় গেল পড়াশোনা, কোথায় গেল ওকালতি, কোথায় গেল বিলেত যাওয়ার স্বপ্ন। দিনরাত ঠাকুরের সাহচর্য লাভের ইচ্ছায় তাঁর কাছে যেতে লাগলেন। এরপর ঠাকুরের গলায় ক্যান্সার ধরা পড়ল। নরেন্দ্র ও তাঁর সঙ্গীরা দিনরাত এক করে ঠাকুরের সেবায় মগ্ন হলেন। তখনও কিন্তু বারে বারে পরীক্ষা করে যাচ্ছেন ঠাকুরকে। তখনও ঠাকুরকে একজন বিশেষ মানুষ বলেই তিনি ভাবছেন, অবতার বলে মানছেন না। ঠাকুরের দেহত্যাগের ঠিক আগের দিন নরেন্দ্র ভাবছেন, “এই অবস্থায় যদি উনি বলেন যে উনি অবতার, তবে বিশ্বাস হয়”। অন্তর্যামী ঠাকুর সেই মুহূর্তে বলে উঠলেন , “যে রাম সেই কৃষ্ণ , ইদানিং এই দেহে (নিজেকে দেখিয়ে) রামকৃষ্ণ”।
নরেন্দ্রের সারা গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল! নিরাকারবাদী ঈশ্বরে অবিশ্বাসী নরেন্দ্রনাথ হয়ে উঠলেন পরম কালীভক্ত। কারন ঠাকুর ও মাকালী যে এক ও অভিন্ন এ ততদিনে তাঁর বিশ্বাস হয়েছে। তিনি বললেন, “ঠাকুর অবতারবরিষ্ঠ” ! সন্ন্যাস নিয়ে হলেন ‘স্বামী বিবেকানন্দ’! আমেরিকার শিকাগো শহরে গিয়ে হিন্দুধর্মের জয়ধ্বজা উত্তোলন করে বললেন, “আমি কিছুই করিনি ! ঠাকুর আমায় দিয়ে করিয়ে নিয়েছেন আমায় দিয়ে বলিয়ে নিয়েছেন”।
এর পরের ঘটনা ইতিহাস। ঠাকুরের অস্থির উপর নির্মাণ করলেন বেলুড় মঠ ও রামকৃষ্ণ মন্দির। রামকৃষ্ণ ভাবআন্দোলনকে দুনিয়া জুড়ে ছড়িয়ে দিয়ে মাত্র উনচল্লিশ বছর বয়সে নিজধামে ফিরে গেলেন নররূপী শিব।
ঠাকুর বলেছিলেন ,”লরেন লোকশিক্ষা দেবে। কাজ শেষ হলে নিজেকে চিনতে পেরে নিজধামে ফিরে যাবে”।
বর্ণে বর্ণে সত্যি হল ঠাকুরের কথা । 1902 সালের চৌঠা জুলাই। হর ফিরে গেলেন হরির কোলে। পৃথিবীকে স্তব্ধ নির্বাক এক বিস্ময় উপহার দিয়ে।
নাট্যাচার্য শ্রী গিরিশচন্দ্র ঘোষ
এর পরেরজন এমন একজন যাঁকে নাস্তিক বললে কম বলা হয়। প্রচন্ড ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, গুরুবাদে নিদারুণ অবিশ্বাসী নাট্যাচার্য গিরিশচন্দ্র ঘোষ । তাঁর প্রখর ব্যক্তিত্ব ও জিভের ধার কে সবাই ডরায়। তাঁর প্রতিবেশী ছিলেন ঠাকুরের বিশেষ ভক্ত বলরাম বসু। বলরাম বাবুর বাড়ি ঠাকুর এসেছেন শুনে গিরিশ নিজে সে বাড়ি গিয়ে ঠাকুরকে যা তা বলে অপমান করে এলেন। বললেন গুরু টুরু তিনি মানেন না। ঠাকুর তাঁকে বললেন তাঁর গুরু তো আছে। গিরিশ কিছুতেই মানবেন না। বললেন ওরকম ভন্ড সাধু তিনি নাকি অনেক দেখেছেন। ওসব চালাকি তাঁর কাছে চলবে না । ঠাকুর নাটক দেখতে ভালবাসতেন। তখন গিরিশ এর নির্দেশনায় ‘চৈতন্যলীলা’ নামক একটি নাটক খুব সমাদৃত হয়েছিল। নামভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন নটী বিনোদিনী। ঠাকুর স্টার থিয়েটার এ ওই নাটকটি দেখতে গিয়েছিলেন। নাটক শেষ হবার পর ঠাকুর খেতে বসেছেন, এমন সময় মদ্যপ গিরিশ সেখানে এলেন। এসে বললেন ঠাকুর যদি অবতার হবেন তাহলে প্রতিজ্ঞা করুন যে গিরিশ এর ছেলে হয়ে আসবেন। ঠাকুর তো মিথ্যে বলতে পারবেন না। অসম্মতি জানালেন। গিরিশ গেলেন ক্ষেপে। ঠাকুরের মুখের সামনে ছিল লুচি ভর্তি থালা। গিরিশ ঠাকুরকে সে লুচি খেতে দিলেন না। ঠাকুরের শত অনুরোধ সত্বেও তাঁকে খেতে দিলেন না। ঠাকুর কাকুতিমিনতি করতে লাগলেন। গিরিশ তাঁকে হাত ধরে বের করে দিলেন।
নেশার ঘোর কাটলে বুঝতে পারলেন কি অন্যায় তিনি করেছেন। তাঁর সহকর্মী, তাঁর ভাই, তাঁর স্ত্রী সবাই তাঁকে ছি ছি করতে লাগলেন। ঠাকুরের শিষ্যরা তো পারলে গিরিশ কে মেরেই ফেলেন। শুধু এই হেনস্থার কথা ভেবে একজনের চোখে ঘুম নেই। তিনি স্বয়ং ঠাকুর। তিনি রাত পোহাতেই ছুটে চললেন গিরিশ এর বাড়ি।
তাঁকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললেন, “ওরে, ঘুমের ঘোরে ছেলে বাপকে লাথি মারে! তাতে কি বাপ দোষ ধরে ?”
ব্যাস!! গিরিশ-এর এবার ঘুমের ঘোর কাটার পালা। কে আছেন এমন গুরু যিনি এভাবে বিপথগামী শিষ্যকে চিনে নিয়ে আপন করে নেন? এই গিরিশ ঘোষ উত্তরকালে বলবেন, “ঠাকুরের ক্যান্সার একটা ঢং! লীলা করছেন লীলা! একদিন সকালে উঠে বলবেন সব সেরে গেছে।”
এতটা জ্বলন্ত বিশ্বাস! বলবেন, “ব্যাস বাল্মীকি যাঁর তল পান নি, তাঁর বিষয়ে আমি আর কি বলব ?”
ঠাকুর গৃহী ভক্তদের মধ্যে এই একজনের হাতেই গেরুয়া বসন তুলে দিয়েছিলেন। অবিশ্বাসের ওপর বিশ্বাসের জয় হয়েছিল। এই সেই গিরিশ। ঠাকুরের ‘ভৈরব’! যেন মত্ত হাতি কে মাথায় হাত বুলিয়ে ঠাকুর শান্ত করে দিলেন! জাদু ছাড়া আর কিই বা বলব ?
ডাক্তার শ্রী মহেন্দ্রলাল সরকার
চতুর্থজন স্বনামধন্য ডাক্তার, মহেন্দ্রলাল সরকার। ইনিও নাস্তিক। প্রথমবার দক্ষিণেশ্বরে আসার আগে বলেছিলেন, সেখানে গিয়ে পাগলটার কান মলে দেবেন। যখন এলেন ভক্তপরিবৃত হয়ে ঠাকুর উপদেশ দিচ্ছেন। ডাক্তার সরকার নীচে বসে অপেক্ষা করছেন। বেশ করে দু কথা শোনাবেন ! পরমহংসের ভন্ডামি কান মলে বের করে দেবেন। ঠাকুরের ডাক এল!
এক শিষ্য এসে বললেন, “যিনি ঠাকুরের কান মলে দেবেন বলেছিলেন তাঁকে ঠাকুর ডাকছেন”।
ডাক্তার সচকিত। এ কথা তো ঠাকুরের জানার কথা নয়, তিনি মনে মনে ভেবেছেন এ কথা। তবে কি সত্যিই লোকে যা বলে তাই ঠিক? তিনি কি সত্যিই অন্তর্যামী ? এর পরের ঘটনা ভুবনবিদিত।
“পরমহংসের পাল্লায় পরে ডাক্তারি উঠে যেতে বসেছে “–এ কথা ডাক্তার অনেকবার বলেছেন।
ঠাকুরের গলরোগ, কথা বলা বারণ। নিরঞ্জন মহারাজ দিনরাত এক করে ঠাকুরের দোর পাহারা দিচ্ছেন যাতে কেউ ঠাকুরের কাছে ঘেঁষতে না পারে। কেউ এলেই ঠাকুর কথা বলবেন। তাঁর যন্ত্রণা বাড়বে । ডাক্তার স্বয়ং বারণ করেছেন ঠাকুরকে কথা বেশি বলতে ।
“শুধু আমার সাথে কথা বোলো হে পরমহংস, আর কারও সাথে নয় ” – আবদার করছেন ।
রুগী দেখতে এসে চার পাঁচ ঘন্টা বসে আছেন ঠাকুরের কাছে, ডাক্তারি লাটে উঠতে বসল । ঠাকুরের দেহত্যাগের দিন তাঁর শিষ্যদের হাতে টাকা গুঁজে দিয়ে ডাক্তার বললেন ঠাকুরের শেষযাত্রার একটা ছবি তুলে রাখতে।
এত ভালবাসা হৃদয়ের কোন কোণে সঞ্চিত ছিল কে জানে ? ওই পাগল ঠাকুর সম্পূর্ণভাবে অধিকার করে নিয়েছেন সেই ভক্তহৃদয়। এমনই ভবরোগবৈদ্য তিনি।
এই হলেন আমার সেই জাদুকর। হাতে জাদুদণ্ড নিয়ে ঘোর নাস্তিক কে আস্তিকে, অবিশ্বাসীকে বিশ্বাসী তে পরিণত করে চলেছেন। আমার হৃদয়ে তাঁরই অস্তিত্ব শুধু। ক্ষণে ক্ষণে প্রমাণ দিয়ে যান তাঁর অস্তিত্বের। সেই অনুভূতি বড় নিজস্ব বড় আপন। তা লেখনীতে প্রকাশ করা খুবই কঠিন। তা অনুভব করা যায় মাত্র!! আজকের এই হানাহানি আর স্বার্থপরতার যুগে আবার তাঁর শারীরিক উপস্থিতির অভাব খুব অনুভূত হচ্ছে। এটুকু বিশ্বাস তিনি আবার আসবেন। সেই আশায় প্রহর গুনে গুনে বসে রয়েছি শুধু।
করুনাময়ের পদধূলিতে আবার সিক্ত হবে ধরণী, দৃঢ় বিশ্বাস !!
0 comments