বিনোদন ডেস্ক: ক্রিকেট প্রেমীরাও ইনসাইড এজের নতুন সিজন নিয়ে আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু দুঃখের হল, ফারহান আখতার-রীতেশ সিদ্ধানি প্রযোজিত ওয়েব সিরিজে ক্রিকেট ছাড়া সবই আছে! ‘ম্যাচ ফিক্সিংয়ের জন্য নিষিদ্ধ হওয়া ক্রিকেটারদের তালিকা’ আছে উইকিপিডিয়ায়। তালিকা যথেষ্ট লম্বা। সেখানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারের সংখ্যাই ১৯। এরপর রয়েছে ঘরোয়া ক্রিকেটে যাঁরা ম্যাচ ফিক্সিং করেছেন তাঁদের নাম (এর মধ্যে বিভিন্ন দেশের ফ্যাঞ্চাইজি লিগও রয়েছে)। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে তাঁদের মধ্যে অনেকেই কিংবদন্তি ভারতীয় ব্যাটার বা বোলার। যেমন মহম্মদ আজহারউদ্দিন, মনোজ প্রভাকর, অজয় জাদেজা প্রমুখ। তার মানেই কি এই, যে ক্রিকেট মানেই বেটিং, ম্যাচ ফিক্সিং! ক্রিকেট মানেই টাকা-ক্ষমতা-যৌনতা-মাদক! ‘জেন্টেলম্যানস গেমে’র অন্ধকার দিকটিকে নিয়ে ওয়েবসিরিজ করতে গিয়ে এমনই শিশুসুলভ তথা অন্যায় দাবি করে বসল আমাজন প্রাইমে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত কৌশিক ভার্মা পরিচালিত ‘ইনসাইড এজ ৩’।
ADVERTISEMENT
বালখিল্য ওয়েব সিরিজটিতে সবাই ঠিকঠাক অভিনয় করেছেন। সিনেমার টেকনিক্যাল দিক নিয়ে এর চেয়ে বেশি না বলাই ভাল। বরং অন্য প্রসঙ্গ তোলা দরকার। সেই প্রসঙ্গ হল, কৌশিক ভার্মা পরিচালিত চলতি সিজনে সব আছে, কেবল ক্রিকেট নেই, এটুকু বললেও কিন্তু কিছুই বলা হয় না। তার চেয়ে বড় কথা, ইনসাইড এজ ৩ দেখলে মনে হতে পারে, ক্রিকেট-পৃথিবীটাই একটি আস্ত নরক। প্লেয়ার থেকে কোচ, বোর্ডকর্তা থেকে স্পনসর, প্রত্যেকেই ‘পিশাচ’ চরিত্র। আধুনিক ক্রিকেটের সবটাই ভাওতা। প্রতিপদে দর্শক সেখানে ঠকছে। শুরুতে উইকিপিডিয়ার যে তালিকার কথা বলা হয়েছিল, ম্যাচ ফিক্সিংয়ে যাদের নাম এসেছে, যারা শাস্তি পেয়েছেন, কেবল তারাই নয়, ইনসাইড এজ ৩ দেখলে মনে হয় শচিন-সৌরভ-রাহুলদের মতো স্বচ্ছ ভাবমূর্তি যাঁদের তাঁরাও হয়তোবা স্বচ্ছ নন! আসলে দর্শক বিনোদনের ধান্দায় পড়ে ক্রিকেট বিরোধী একটি সিরিজ তৈরি করেছেন প্রযোজকদ্বয় ও পরিচালক। যা রীতিমতো অন্যায়। ক্রিকেটের প্রতি ঘৃণার উদ্রেক জাগানো এই সিরিজটিকে ভালবাসা তো দূরে থাক, আপনি যদি ক্রিকেটপ্রেমী হন, তবে এই সিরিজের বিরোধিতায় প্রচার চালাবেন- যেন আর কেউ না দেখে ইনসাইড এজ ৩।
অন্যদিকে যশরাজ ফিল্মসের ডিজিটাল ডেবিউ! ওভার দ্য টপ বা ওটিটি প্লাটফর্মে যাত্রা শুরু করছে যশরাজ ফিল্মসের। যশরাজ এন্টারটেনমেন্টে নামে আসতে চলেছে তাদের এই ওটিটি প্লাটফর্ম। প্রথম বছরেই তারা পাঁচ পাচঁটি বড় প্রজেক্ট আনতে চলেছে। প্রকাশিত হল প্রথম প্রজেক্টের ফার্স্ট লুক। টুইটারে প্রকাশিত হল তাদের প্রথম প্রজেক্টের নাম। ‘দ্য রেলওয়ে মেন’ নামে যশরাজের এই প্রজেক্টের প্রেক্ষাপট ১৯৮৪’র ভোপাল গ্যাস দূর্ঘটনা। ১৯৮৪ সালে ২রা ডিসেম্বর ঘটেছিল সেই ভয়াবহ গ্যাস লিকের ঘটনা, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল পাঁচ লক্ষেরও বেশী মানুষ। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে পোস্ট করে সেই ঘটনার আনসাং হিরোদের স্মরণ করা হয়েছে যশরাজের পক্ষ থেকে।
ওয়েব সিরিজটি পরিচালনা করতে চলেছেন নবাগত রাহুল রাওয়াইল। পরিচালকের কাস্টিং রীতিমত নজরকাড়া। আর মাধবন, কে মেনন, দিব্যেন্দু শর্মা ছাড়াও যশরাজের এই প্রজেক্টে দেখা যাবে ইরফান খানের ছেলে বাবিল খানকে। ফার্স্ট লুকে প্রত্যেক অভিনেতাকে মুখে মাস্ক বাধাঁ অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। এই ওয়েব সিরিজের মাধ্যমে নির্মাতারা সেই ঘটনার সেভিয়ারদের উপর আলোকপাত করতে চাইছেন। মাল্টিস্টারার এই প্রজেক্ট নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে উত্তেজনা চরমে। ডিকাপলড নামে নেটফ্লিক্সের একটি প্রজেক্টে আর মাধবনের কাজ করার কথা সামনে এসেছে ইতিমধ্যেই। স্পেশাল অপস ওয়ান পয়েন্ট ফাইভের জন্য চর্চার শিরোনামে রয়েছেন কে কে মেনন। মিথাইল আইসোসায়ানাইট গ্যাস লিকের সেই ঘটনার ৩৮ বছর পূর্তির দিন অর্থাত ২রা ডিসেম্বর ২০২২ থেকে স্ট্রিম হবে ওয়েব সিরিজটি।
0 comments