ভৌতিক গল্প – অদ্ভুত সেই গাছ

ভৌতিক গল্প – অদ্ভুত সেই গাছ

১)
“অবিশ্বাস্য, একেবারে অবিশ্বাস্য”, খবরের কাগজটা মুখের সামনে থেকে সরিয়ে প্রথম কথা বলল সৌম্য। আমি হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছি দেখে কাগজটা আমার দিকে এগিয়ে দিল। আমি কাগজে চোখ রেখে নিজেই অবাক হয়ে গেলাম। সত্যিই অবিশ্বাস্য। এত সুন্দর একটা কটেজের ভাড়া যে এত কম হতে পারে, তা ভাবাই যায় না। আমি জায়গা এবং এই কটেজ সংক্রান্ত পুরো বিবরণ যখন পড়ে শেষ করলাম, সৌম্য ততক্ষণে বুকিংয়ের জন্য ফোন করেছে কাগজে দেওয়া নম্বরে।         

সৌম্য আমার ছোটবেলার বন্ধু। তাই ছুটির দিনে সকাল সকাল চলে এসেছি সৌম্যর বাড়ি, শীতের ছুটিতে কোথায় ঘুরতে যাওয়া যায় সে ব‍্যাপারে আলোচনার দরকার। শুরুতেই এমন একটা চমৎকার খোঁজ পেয়ে আমাদের মন খুশিতে ভরে উঠল।   

কিছুক্ষণের মধ্যে সৌম্যর মা হাজির হলেন দু-প্লেট লুচি তরকারি নিয়ে। নরম লুচির টুকরোয় তরকারি মাখিয়ে সৌম্য বলল, “সমস্ত কথা হয়ে গেছে। স্টেশনে গাড়ি পাঠিয়ে দেবে। থাকা খাওয়ার কোনো অসুবিধা হবে না। আর কাগজে যা বর্ননা দিয়েছে তা যদি সিকিভাগও সত্যি হয়, তাহলে নৈসর্গিক দৃশ্য যে অসাধারন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। শুধু দুটো দিন টেলিফোন নেটওয়ার্ক দুর্বল থাকবে – এই যা।” আমাদের সে বিষয়ে কোনো অসুবিধা নেই। আমরা দুজন থাকলেই চলবে। আমি চারটে লুচি শেষ করে পাঁচ নম্বর লুচির দিকে হাত বাড়ালাম।

(২)
কাগজের বিজ্ঞাপনে যে বর্ননা দেওয়া ছিল তা এক বর্ণও মিথ্যা নয়। এখানে এসে মন ভরে গেছে আমাদের। জায়গাটার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভাষায় বর্ণনা করা অসম্ভব। ওড়িশা – অন্ধ্রপ্রদেশ সীমান্ত সংলগ্ন জংলী এলাকা। চারপাশে অনুচ্চ টিলাসদৃশ পাহাড়ের মাঝখানে অপেক্ষাকৃত ঢালু উপত্যকায় এই কটেজ। কটেজের চারপাশ বেশ পরিষ্কার। চারপাশে নানারকম গাছপালার জঙ্গল। ঠিক পিছনেই একটা তিরতিরে ক্ষরস্রোতা এঁকে বেঁকে বয়ে গেছে কোনো অজানা গন্তব্যে। নদীর ধার বরাবর ছোট বড় পাথর আর গাছের সারি। ঘন গাছের ফাঁক দিয়ে যেটুকু চোখ যায়, নীল আকাশের দিগন্তে পাহাড়ের সারি বিরাজ করছে।           

ADVERTISEMENT
Swades Times Book

ভোরবেলা স্টেশনে নেমে কটেজের গাড়িতে করে এইরকমই পাহাড় জঙ্গলময় সুদৃশ্য পথ ধরে আমরা এই কটেজে এসে পৌঁছেছি। এই স্থান লোকালয় থেকে অনেকটা দূরে। যেন সৌন্দর্য্যে আবৃত কোনো বিচ্ছিন্ন ভূখণ্ডে চলে এসেছি আমরা দুজন।

কটেজের কেয়ারটেকারই এর দেখভাল ক‍রে। সাথে রান্নাবান্না, গাড়ি চালানো। দ্বিতীয় কোনো লোক নেই। এহেন সুন্দর কটেজ ও কটেজ সংলগ্ন পরিবেশে বেমানান, বেখাপ্পা কেবল একটাই জিনিস। কটেজের পাশে কিছুটা দূরত্বে একটা মড়া গাছ কয়েকটা মড়া কালচে ডালপালা বিস্তার করে দাঁড়িয়ে আছে। গাছটার দিকে তাকালে চারপাশের সৌন্দর্য যেন এক নিমেষে হারিয়ে যায়।           

কটেজের সামনে একটা কাঠের টেবিল, চারদিকে চারটে গাছের গুঁড়ি কেটে বসানো আছে। আমি আর সৌম্য সেখানে বসলাম। ক‍্যামেরা তাক করে খচাখচ কয়েকটা ছবি তুলে নিলাম। সৌম্যর নির্দেশিত আঙুল বরাবর তাকিয়ে দেখলাম এক অপরূপ দৃশ্য। একমনে দুজনে সেদিকে তাকিয়ে রয়েছি, পিছনে একটি মেয়েলী কন্ঠে আমাদের চমক ভাঙল। দেখলাম আমাদের পাশে যে ঘরটা বন্ধ ছিল সেই ঘর খুলে এক বাঙ্গালী দম্পতি বেরিয়ে এসেছে।        


আমাদের পাশের গুঁড়িতে বসতে বসতে মেয়েটি জিজ্ঞাসা করল, “আপনারা কি কলকাতা থেকে এসেছেন?” আমরা হ‍্যাঁ সূচক মাথা নাড়লাম। কেয়ারটেকার রঘুয়া চারকাপ চা নিয়ে হাজির হল। ছেলেটি জিজ্ঞাসা করল, “আচ্ছা, গতকাল যে ফটোগ্ৰাফার ভদ্রলোক ছিলেন উনি কোথায়?”- “চলে গেছে”, রঘুয়া ওর ঘরঘরে গলায় সংক্ষেপে জবাব দিয়ে চলে যাচ্ছিল মেয়টি বলল, “আচ্ছা দাদা, গতকাল রাতে কেউ বাঁশি বাজাচ্ছিল?” রঘুয়া একটু থমকে গেল। তারপর বলল, “ও আপনি ভুল শুনেছেন।” সে কথা শেষ করে আর সেখানে দাঁড়ালো না। 

রঘুয়া চলে যেতে মেয়েটা নিচু গলায় আমাদের বলল, “লোকটা একটু কেমন যেন!” এটা ঠিক। এসে থেকে আমরাও লক্ষ্য করেছি, রঘুয়া চুপচাপ, গম্ভীর, কম কথা বলে। ছেলেটা বলল, “এত সুন্দর একটা জায়গা, একটা মড়া গাছ আর একটা নিরস কেয়ারটেকার পুরো স্পয়েল করে দিল।” আমরা একটু হাসলাম। চা শেষ করে দুজনে উঠে পড়লাম। এবার আমাদের বেড়াতে হবে। একটা জায়গায় এসে চারিদিকে ঘুরে না বেড়ালে কোনো লাভ নেই। আর পায়ে হেঁটে প্রকৃতিকে উপভোগ করার মজাই আলাদা।

(৩)
রঘুয়া যেরকমই হোক রান্নার হাত চমৎকার। রাতে চাপাটি আর তিতিরের মাংস খেতে খেতে সৌম‍্য বলল, “অনবদ্য। কলকাতায় গিয়ে জায়গাটার কথা সবাইকে বলতেই হবে।           
রাত্রে খাওয়া দাওয়ার পর কিছুক্ষণ বারান্দায় বসে রইলাম। বেশ ভালো লাগল। জ‍্যোৎস্না ভরা রাতে মায়াবী আলোয় লম্বা লম্বা গাছপালার জঙ্গল ডালপালা বিস্তার করে আলো আঁধারীর লুকোচুরি খেলায় সামিল হয়েছে। অনেক্ষণ এভাবে বসে বসে সেই সৌন্দর্য উপভোগ করে দুজনে উঠে পড়লাম। ডানদিকে সেই মড়া গাছটার দিকে চোখ যেতে বুকটা ছ‍্যাঁত করে উঠল। গাছটা বড় অদ্ভুত, আর পাঁচটা গাছের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একাকী দাঁড়িয়ে আছে এক অলৌকিক পিশাচিনীর মত।             

আমরা শুয়ে পড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়লাম। মাঝরাতে সৌম্যর ডাকে ঘুম ভাঙল, “ঋজু শুনতে পাচ্ছিস?” ঘুম আমাকে তখন আস্টেপিষ্টে জড়িয়ে রেখেছে। তবু শুনতে পেলাম কেউ অদ্ভুত সুরে বাঁঁশি বাজাচ্ছে, আর দূর থেকে ভেসে আসছে মচ্‌মচ্ করে কিছু শব্দ। সৌম্য বলল, “যাবি নাকি! দেখবি ব‍্যাপরটা কি!” আমি ওর কথায় সায় দিলাম না। সত্যি বলতে এই শীতের রাতে বিছানা ছাড়তে মোটে ইচ্ছে করছে না। আমার আগ্রহ নেই দেখে সৌম্য শুয়ে পড়ল। আমিও আবার ঘুমের রাজত্বে পাড়ি দিলাম। 

সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই ভাবলাম বাঁশির আওয়াজ যে রাতের বেলা আমরাও শুনেছি পাশের ঘরের মেয়েটিকে বলা দরকার। কিন্তু বারান্দায় এসে অবাক হলাম। পাশের ঘরের দরজা খোলা, ঘরেও কেউ নেই, আবার রঘুয়াকেও সামনা সামনি চোখে পড়ল না। অগত্যা ক‍্যামেরা গলায় ঝুলিয়ে আমরা বাইরে বেরোলাম। সৌম্য বলল, “বাঁশির আওয়াজটা কোনদিক থেকে আসছিল বলত?” আমি বললাম, “সেটা অনুমান করা খুব কঠিন।”             

আমরা হাঁটতে হাঁটতে সেই মড়া গাছটার খুব কাছে চলে এলাম। গাছটাকে কাছ থেকে ভালো করে দেখলাম। গাছটার গড়ন বড় অদ্ভুত। কোনো মানুষ যেন আঙুলে ব‍ড় বড় নখ নিয়ে দুহাত তুলে অবনত মস্তকে দাঁড়িয়ে আছে। ঝুঁকে পড়া কেশসদৃশ পুড়ে যাওয়া তন্তু সমূহ মাথা, মুখ সব ঢেকে রেখেছে। দেখতে দেখতে এক অজানা ভয়ে শরীর অবসন্ন হয়ে গেল।পিছনে ঘুরে সৌম‍্যকে দেখতে যাব, আমার শরীর বেয়ে ঠাণ্ডা স্রোত নেমে গেল। কেউ যেন একটা হাত বাড়িয়ে আমায় পিছন থেকে জড়িয়ে ধরল।আচমকা ভয় পেয়ে গেলেও যখন দেখলাম গাছটারই একটা আলগা ডাল আমার উপর ঝুঁকে পড়েছে, তখন কিছুটা আস্বস্ত হলাম। সৌম‍্যর ডাকে আবার চমকে উঠলাম। গাছের তলা থেকে নিচু হয়ে সৌম্য যেটা তুলে নিল সেটা আমারও চেনা। গতকালই এই আংটিটা মেয়েটির আঙুলে দেখেছি। ততক্ষণে রঘুয়া সেখানে হাজির হয়েছে। সৌম‍্যর হাত থেকে আংটিটা একপ্রকার ছিনিয়ে নিয়ে বলল, “আমি পাঠানোর ব্যাবস্থা করে দেব।” আমরা একটু অপ্রস্তুত হলাম। কটেজে ফিরে দেখলাম একজন নতুন অতিথি এসেছেন। এক বিদেশী ভদ্রলোক এবং তার পোষা কুকুর ‘লুসি’।             

 

রাতের খাওয়া শেষ করার পর আমরা তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়লাম। আগামীকাল আমাদের ফিরে যেতে হবে। মাঝরাতে সেই অদ্ভুত বাঁশির শব্দে আমার আর সৌম‍্যর দুজনেরই ঘুম ভেঙে গেল। বাঁশির শব্দ গতরাতের থেকে অনেকটা জোড়ালো। আর আজ একটা অজানা টান অনুভব করছি, যেন যেকোনো মূল্যে বাইরে গিয়ে দেখতেই হবে ব‍্যাপারটা কি। 

আমি আর সৌম্য সেই শীতের রাতে বাইরে বেরিয়ে এলাম। বারান্দায় আসতেই ডানদিকে এক ভয়ানক দৃশ্য দেখে আমাদের শরীর ভারী হয়ে গেল। সেই মড়া গাছ আর মড়া নেই। যেন প্রেতলোক থেকে জীবনপ্রাপ্ত হয়ে ডালপালা নেড়ে বাঁশির সুরে নেচে চলেছে। এক অলৌকিক লালচে আলো ঘিরে রেখেছে গাছটাকে। কিছু দূরে যন্ত্রের মত একভাবে সেই অদ্ভুত সুরে বাঁশি বাজিয়ে চলেছে রঘুয়া।  এর মধ্যে দেখলাম সেই সাহেব নেশাগ্ৰস্ত রোগীর মত বারান্দা পেরিয়ে উঠানে নেমে সেই গাছের দিকে হাঁটতে শুরু করেছে। আমরাও ওর পিছনে হাঁটতে লাগলাম। একটা সময় মনে হল ঐ বাঁশির সুরে যেন কি এক মাদকতা আছে। আর এই লালচে আভা, গাছের শাখা প্রশাখার আন্দোলন, এই নাচের ভঙ্গি, সবকিছুতে অবশ্যই কোনো অশুভ ইঙ্গিত আছে। সেই গাছের কাছে এগিয়ে যাওয়া ঠিক কাজ নয়। কিন্তু আমাদের তখন পিছনে আসার আর কোনো উপায় নেই। একটা ঘোরের মধ্যে আমরা এগিয়ে চলেছি। আমাদের বোধ, বুদ্ধি সবকিছু আছে। শুভ – অশুভ ইঙ্গিত উপলব্ধি করতে পারছি। কিন্তু শরীরের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছি।               

রাতের অন্ধকারে সেই জংলা পথ ধরে সেই ভয়াল রাক্ষুসে গাছের দিকে এগিয়ে চলেছি আমরা তিনজন। প্রথমে সাহেব, তারপর আমি, পিছনে সৌম্য। কি ঘটতে চলেছে সেই কথা ভেবে চিন্তা ও ভয়ে মাথাটা ব‍্যাথায় ফেটে যাচ্ছে। বাঁশির সুর আগের থেকে আরো দ্রুত লয়ে বাজছে। রঘুয়ার কোনো অনুভূতি নেই। একভাবে যন্ত্রের মত বাঁশি বাজিয়ে চলেছে। গাছও যেন আমাদের আসতে দেখে আরও উদ‍্যাম তালে নাচছে। 

সাহেব যখন গাছের প্রায় কাছে, ঠিক তখনই কুকুরের ডাক শুনতে পেলাম। ‘লুসি’, সে ক্ষিপ্রভাবে তেড়ে গেল রঘুয়ার দিকে। বাঁশি থামাতে বাধ্য হল সে। বাঁশি থামতেই আমাদের ঘোর যেন কেটে গেল। এ আমরা কোথায় চলেছি! ছুটে পিছিয়ে এলাম। কিন্তু হতভাগ্য সাহেব ততক্ষণে দেরী করে ফেলেছে। এক বিভৎস দৃশ্য প্রত‍্য‌‌ক্ষ করে আমরা মাটিতে বসে পড়লাম। গাছের ডালপালাগুলো শক্ত হাতে সাহেবকে ধরে ফেলেছে আর পাকিয়ে ফেলছে তার শরীরটা মচ্‌মচ্ করে। উপরের মাথাটা আরো নিচু হয়ে সেটা নিজের মধ্যে ঢুকিয়ে ফেলছে ধীরে ধীরে।             

লুসি মালিকের এই ভয়ংকর পরিনতি দেখে ঘাবড়ে গেল। সে তার মালিককে বাঁচাবে, না রঘুয়াকে বাঁশি বাজানোর থেকে বিরত রাখবে বুঝতে পারল না। রঘুয়া লুসির থেকে সরতে সরতে কখন গাছের কাছে এসে পড়েছে সে নিজেও জানেনা। গাছ ততক্ষণে সাহেবের শরীর আত্মস্থ করে রঘুয়াকে ধরে তার অঙ্গ – প্রত‍্যঙ্গ ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেতে আরম্ভ করেছে। এই দৃশ‍্য দেখে আমরা দুজনেই জ্ঞান হারালাম। জ্ঞান হারানোর পূর্ব মুহুর্তে কানে বাজলো রঘুয়ার অসহায় আর্তনাদ এবং লুসির ব‍্যার্থ ‘ভৌ ভৌ’ ডাক।                 

 

ভোরবেলা যখন জ্ঞান ফিরল তখন দেখলাম চারপাশ শুনশান। মড়া গাছ একভাবে সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে। সাহেব, লুসি, কারোর চিহ্নমাত্র নেই। পাশে বসে বিহ্বল দৃষ্টিতে গাছটার দিকে চেয়ে আছে সৌম্য। 

বেশি দেরী না করে ব‍্যাগপত্র নিয়ে তখনই সেই স্থান ত‍্যাগ করলাম। অনেকটা দূরে এক গ্ৰামে এসে শুনলাম অনেক বছর আগের এক ঘটনা। ‘পাহাড় জঙ্গল ঘেরা ঐ স্থানে নাকি ছিল এক আদিবাসী গ্রাম। কটেজ মালিক তাদেরকে উচ্ছেদ করলে এক আদিবাসী ডাইনী মালিকের পরিবাবারের সবাইকে একে একে মেরে ফেলে। শেষে ধরা পড়লে মালিক ঐ ডাইনীকে ঐ গাছে বেঁধে জ্বালিয়ে দেয়।’গ্ৰামবাসীদের নিয়ে আমরা সেই স্থানে এসে গাছের নিচে পড়ে থাকা সেই ভয়ানক বাঁশি সহ গাছটায় কেরসিন ঢেলে আবার আগুন লাগিয়ে দিলাম। গাছটা পুড়ে একেবারে ছাই হয়ে গেল। এবার নিশ্চন্ত। যখন ফিরছি বহুদূর থেকেও চোখে পড়ল, আকাশের বুকে ওঠা সেই জ্বলন্ত বিভীষিকা নির্গত কুন্ডলীকৃত ধোঁয়া। 


(৪)
আমরা ফিরে এসেছি বেশ কয়েক মাস কেটে গেছে। আবার একটা রবিবার গিয়ে হাজির হয়েছি সৌম‍্যর বাড়িতে।- “অবিশ্বাস্য, একেবারে অবিশ্বাস্য”, খবরের কাগজটা মুখের সামনে থেকে সরিয়ে প্রথম কথা বলল সৌম্য। আমি হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছি দেখে কাগজটা আমার দিকে এগিয়ে দিল। ওর মুখটা দেখলাম ভয়ে একেবারে ফ‍্যাকাশে হয়ে গেছে। কাগজে চোখ রেখে নিজেই বেশ ভয় পেয়ে গেলাম। মাথা থেকে পা পর্যন্ত শরীরটা ঝিমঝিম করে উঠল। সত্যিই অবিশ্বাস্য।           

খবরের কাগজে আবার উঠে এসেছে সেই একই বিজ্ঞাপন। ছবিতে সেই একই কটেজ আর কটেজের পাশে সেই একইভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে অদ্ভুত সেই মড়া গাছ।

(সমাপ্ত)         
                             

Redirect to Address page

Updating Subscription details

Redirecting...Please Wait