-সময় হয়ে আসছে, গণদেবতা অন টাইম আছে।
-কাল অফিসে অফ নিতে পারতে, আজ সারাদিনের ভোর থেকে দৌড়, মাঝরাতে বাড়ি পৌঁছাবে। তারপর তো বাকি রাত জেগেই কাটিয়ে দেবে।
-কাল আর্জেন্ট মিটিং আছে।
-শোনো, কিছুক্ষণ বাদে বাদে চা আর সিগারেট খাওয়াটা কম করো।
-একমাত্র ওই দুটোই তো আমার…
-আলসার আর ক্যান্সার কিন্তু তোমার না, মনে রেখো!
-রাখবো।
-কি দেখছো বারবার করে ফোনে?
-কারোর মেসেজ না, ট্রেন দেখছি।
-তুমি যে অন্য কারোর মেসেজ দেখছো না, সেইটুকু অন্তত জানি!
-হমমম।
-ক্লান্ত লাগছে? কিছুই তো খেলে না দুপুরে।
-নাহ্। ঠিক আছি।
-তুমি কেমন ভাবে যে এমন শান্ত থাকতে পারো! ভেবেই অবাক লাগে মাঝে মাঝে!
-কাল থেকে আর অবাক হতে হবে না, অবাক হবার থেকে ছুটি।
-রাগ করে বলছো, জানি।
-নাহ্, কোনো রাগ অভিমান কিছুই নেই।
-সেইটাই তো অবাক লাগে, কেনো কিছু দেখাও না!
-আর পাঁচ মিনিট।
-হম।
-তোমাকে আজ ভীষণ সুন্দর লাগছিলো। সেই কাজল কালো চোখ!
-মানে!
-মানে কিছুই নেই। প্রথমদিন যেদিন দেখেছিলাম, ঠিক তেমনই। শুধু সেই দিন ছিলো শুরু আর শেষ..সদ্য প্রাক্তন স্ত্রী কে শেষবারের মতো বলাই যায়!
-একটা কথা ভেবে খুব অবাক লাগছে, এতো সহজে তুমি ডিভোর্স দিতে রাজি হয়ে গেলে!
-দাঁড়িয়ে গেলো গণ দেবতা।
-উত্তর দাও।
-তোমার দিদি আগেই আমাকে বলেছিল যে তোমার জীবনে নতুন একজন এসেছে। আজ তাকে দেখলাম। আমি অনেকদিন ধরেই মানসিক ভাবে তৈরী ছিলাম। টান যেখানে কেটে গেছে আর লাভ নেই…
-জানতে আগেই? আজ কেনো আসতে বলেছিলাম! অনেকটাই আন্দাজ করেছিলাম, আজই হয়তো সেই দিন হতে পারে।
-কোন ধাতু দিয়ে গড়া তুমি!
-শুধুই রক্ত মাংস। আচ্ছা দরকারী কথা। আমি তোমার কথা মেনে নিলাম সব। আজ আমাদের মেয়ের পাঁচ বছর হলো, দশ বছর পর আমি আজকের দিনে আবার ফিরে আসবো, আমার মেয়ে কে নিতে। প্রেমিক হিসেবে, স্বামী হিসাবে আমি ব্যর্থ। বাবা হিসাবে আমাকে পারতেই হবে।
-হম!
-মেয়ের সব খরচা ঠিক দু তারিখ ব্যাংকে এসে যাবে।
-ট্রেন ঢুকছে। তোমার নতুন জীবনের জন্য শুভেচ্ছা রইলো।
-তুমি, নতুন করে পারলে সংসার করো।
-আর হয়তো না, বারবার করে ডিভোর্স ফাইলে সই করবো নাকি!
-পারবে একা থাকতে?
-সরি!
-কেনো?
-তোমাকে একদিন ভালোবেসেছিলাম, সেই জন্য… চলি।
ADVERTISEMENT
ছবি সৌজন্যঃ wall.alphacoders.com
0 comments