প্রাত্যহিক জীবনে শ্রীমদভগবত গীতার প্রাসঙ্গিকতা

প্রাত্যহিক জীবনে শ্রীমদভগবত গীতার প্রাসঙ্গিকতা

গীতাসার

প্রথম অধ্যায় (অর্জুনবিষাদযোগ)

“ন চ শ্রেয়হনুপশ্যামি হত্বা স্বজনমাহবে
ন কাংঙ্খ্য বিজয়ঙ কৃষ্ণ ন চ রাজ্যম সুখানি চ”( শ্লোক : ৩১)

কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ শুরু হতে চলেছে । পাণ্ডব আর কৌরব পক্ষের সব সেনা এবং রথী মহারথীগণ ধর্মক্ষেত্রে সমাগত । যুদ্ধের জন্য সবাই প্রস্তুত । এমন সময় মহাধনুর্ধর অর্জুনের মনে অনেক বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে । তিনি কিছুতেই স্বজন বন্ধুদের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে রাজি নন । তাঁর মনে হচ্ছে কি লাভ নিজের আত্মীয়দের সাথে লড়ে ? যুদ্ধ শেষে এঁদের অনেকেই তো বেঁচে থাকবেন না । তাহলে মৃত মানুষের শবের উপর বসে তাঁরা কি সুখে রাজ্য ভোগ করবেন ? কাদেরই বা দেখাবেন নিজেদের ধর্মরাজ্য কিভাবে তাঁরা সুশাসনের সাহায্যে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন ? তিনি সামনে বলে চলেছেন যুদ্ধে স্বজনগণকে বধ করে তিনি কোনো মঙ্গল দেখতে পাচ্ছেন না । এই নিদারুণ কুলক্ষয়কারী যুদ্ধ না বাধলেই মঙ্গল । নাই বা পেলেন তাঁরা রাজ্যভাগ , আবার হয়ত বনচারী হবেন । হয়ত নিদারুণ কষ্টের মধ্যে জীবনের শেষ দিনগুলো অতিবাহিত হবে । তবু আত্মীয়দের রক্তে মাখা তাঁদের বিধবাদের হাহাকারে সিঞ্চিত এই জয় তিনি চান না ।

ADVERTISEMENT

অর্জুন আরও বলছেন যদিও দুর্যোধন প্রভৃতি দুর্বৃত্তরা তাঁর স্ত্রী দ্রৌপদীকে ভরা সভায় বস্ত্রহরণ করে অমার্জনীয় অপরাধ করেছে তথাপি তিনি আত্মীয়পরায়ণ । এই ভীষণ যুদ্ধে তাঁর নিজেরই কুলক্ষয় হবে । এ তিনি সহ্য করতে পারবেন না । তাঁর মনে হচ্ছে কৌরবদের বিনষ্ট করার বদলে বরং তাঁরা বিনষ্ট হবেন তা ও ভাল কিন্তু যুদ্ধ করতে পারবেন না ।

অর্জুনের মত যোদ্ধার মনে এই ভাব এল কেন ? তাও আবার যুদ্ধ শুরু হওয়ার প্রাক মুহূর্তে ? প্রশ্ন উঠতে পারে । কিন্তু তিনি যোদ্ধা হবার আগে একজন মানুষ । মানবতার খাতিরেই তাঁর মনে এই দ্বন্দের ঝড় ওঠা স্বাভাবিক । তাঁর এই দ্বন্দ্ব বাসুদেব শ্রী কৃষ্ণ কি কি ভাবে এবং কোন কোন উপদেশের সাহায্যে মিটিয়েছেন তারই সংকলন হল ‘শ্রীমদভগবৎ গীতা’। পরের পর্বে থাকছে ‘সাঙ্খ্যযোগ’।

 
 
  •  

Redirect to Address page

Updating Subscription details

Redirecting...Please Wait