অটিজম

অটিজম

অটিজম হলো শিশুদের বিশেষ এক মানসিক অবস্থা যেখানে শিশু তার মনের ভাব সঠিক ভাবে প্রকাশ করতে অক্ষম হয়। বছর দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যে অটিজম বোঝা যায়। চোখের দিকে চোখ না তাকিয়ে কথা বলা, একই জিনিস নিয়ে বার বার খেলা, বা একই কাজ বার বার বার করা, বিশেষ রং, গন্ধ আলো শব্দ প্রচন্ড ভাবে এদের বিচলিত করে। সঠিক বয়সে এদের কথা না বলতে পারা একটা খুব বড়ো সমস্যা। মনের ভাব প্রকাশ করতে না পারার দরুন প্রচন্ড ভাবে ক্ষিপ্ত থাকে। 

এই শিশুরা হাইপার হয়ে যায়। কখনো কখনো নিজেদের কে আঘাত করার একটা প্রবণতা এদের মধ্যে চলে আসে। ঋতু পরিবর্তন এদের মধ্যে গভীর প্রভাব বিস্তার করে। অজানা অচেনা জায়গায় এরা নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে পারেনা, ভিড় অনেক লোক এদের মস্তিষ্কে চাপ সৃষ্টি করে, চড়া জোর আলো এরা নিতে পারেনা, ঘুমের পরিমান অত্যন্ত কম হওয়ার জন্য সারাদিন মন এদের বিক্ষিপ্ত থাকে।

ADVERTISEMENT

এতো কিছু না পারার মধ্যেও অনেক কিছু কিন্ত এরা পারে যা আমরা পারিনা। ভালো আঁকা, গান করা, ভালো নাচতে পারা, এদের এক সহজাত প্রবৃত্তি। কোনো কোনো শিশু পড়াশোনায় খুব ভালো হয়, অংক তে অনেক অটিস্টিক বাচ্ছা আগ্রহী হয়।

বর্তমান যুগে এটি অত্যন্ত গুরুতর সমস্যা। মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের অটিজম সমস্যা বেশি। গড়ে 60 জন ছেলে শিশুর মধ্যে একটি ছেলে বাচ্ছা ও 100 জন মেয়ে শিশুর মধ্যে একটি মেয়ে অটিজম এর শিকার হয়। সঠিক পদ্ধতি দ্বারা, শিক্ষণ দ্বারা এবং দৈহিক যোগব্যায়াম এর দ্বারা এদের কে কিছুটা স্বাভাবিক জীবন পদ্ধতিতে আনা যায়। প্রত্যেক দিনের যুদ্ধ চলে এদের কে নিয়ে। এরা ভালোবাসার কাঙাল। আদর যত্ন ভালোবাসায় এদেরকে ভরিয়ে তোলাই আমাদের কর্তব্য।

আমি একজন অটিস্টিক শিশুর মা। আমার মতে আর পাঁচটা বাচ্ছার মতো খেলতে দেওয়া, স্কুলে নিয়ে যাওয়া, থেরাপি করানো, পাঁচ জনের সাথে মেশানো এগুলো কিন্তু প্রাত্যহিক জীবনের খুবই দরকার। যাতে বাচ্চারা কিছুটা হলেও এগিয়ে যেতে পারে।

আসুন না আমরা সবাই মিলে একত্রিত হয়ে এই কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাই। আমাদের শিশুরাও যে কিছু করে দেখাতে পারে তার দায়িত্ব আমাদের আপনাদের সবাইকে নিতে হবে। এক সুস্থ স্বাভাবিক জীবন দেওয়ার কর্তব্য আমাদর সবার। তবেই তো আগামী প্রজন্ম অটিজম এর অন্ধকার থেকে দূরীভূত হয়ে এক আলোকময় জীবনে প্রবেশ করবে।

Redirect to Address page

Updating Subscription details

Redirecting...Please Wait