বিসর্জন সম্পর্কে কি ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব

বিসর্জন সম্পর্কে কি ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব

বিসর্জনের বাজনা বাজে বিজয়া গমন
 

 ওরে নবমীনিশি! না হৈও রে অবসান
শুনিছে দারুণ তুমি, না রাখ সতের মান
সকাল হলেই যে গিরিরাজপ্রাসাদ শূন্য করে দিয়ে আবার কৈলাশে ফিরে যাবে উমাআবার আসবে একবছর পরচারদিন গিরিরাজপ্রাসাদ আলো করে এসেছিল শিবের ঘরনী উমা, পার্বতীএই চারটে দিনের জন্য অপেক্ষা করে থাকে মা মেনকানবমীর বিকেল থেকেই বুকের ভিতরটা থেকে থেকে কেমন যেন ডুকরে উঠছিল মেনকারমেয়েকে বিদায় দেওয়ার লগ্ন যেন আর একটু পিছিয়ে যায়, করজোড়ে দেবী উষার কাছে প্রার্থনা করছিল মা মেনকা

ADVERTISEMENT
Tuhu Momo Video Teaser

কিন্তু সব আশার, সব কামনার সমাপ্তি ঘটিয়ে দশমী প্রভাতের আবির্ভাব হয়- মেনকাকেও বাস্তব সত্য মেনে নিতে হয়দশমী প্রভাতে মা মেনকার মনোবেদনা ব্যক্ত হয়েছে নিম্নলিখিত পদে যেখানে মেনকার মাতৃরূপ বিকশিত, দৈব ভাবনার বিন্দুমাত্র প্রকাশ নেই,-

কি হল নবমীনিশি হইল অবসান গো
বিশাল ডমরু ঘন ঘন বাজে ধ্বনি বিদরে প্রাণ গো

মেনকার সব প্রার্থনা বিফলে যায়বিজয়ার সাথে কৈলাশ থেকে শিব ডমরু বাজিয়ে তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে যাওয়ার জন্যে শ্বশুরবাড়ি হিমালয়ে এসে উপস্থিত হনএতে মেনকার বুক আরও ফেটে যায়শেষপর্যন্ত মেনকা তাঁর কন্যাকে আটকে রাখতে চেষ্টা করেন, তাই সখী বিজয়াকে মেনকা বলে দেন যে, সে যেন হর কে বলে দেয় যে উমাকে পাঠানো যাবে না,-

জয়া বল গো! পাঠান হবে না,
হর মায়ের বেদন কেমন জানেনা
শেষপর্যন্ত মেনকা তাঁর কন্যাকে আটকে রাখতে পারেন না, শিব উমাকে নিয়ে কৈলাশের উদ্দেশ্যে রওনা দেন
এই প্রসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণদেবের একটি কাহিনি স্মরণীয়রানি রাসমণীর জামাতা মথুরবাবু একদা আবেগবশীভূত হয়ে বিজয়ার দিনেও দেবীকে বিসর্জন দেবেন না বলে জেদ ধরে বসেনতখন ঠাকুর রামকৃষ্ণ তাঁকে বোঝান যে, বিজয়ার অর্থ দেবী-মা এবং সন্তানের বিচ্ছেদ নয়মা কখনওই সন্তানকে ছেড়ে থাকতে পারেন নাঠাকুর বলেন, একদিন বাইরের দালানে বসে মা পূজা নিয়েছেন, আজ থেকে মা হৃদয়মন্দিরে বসে পূজা নেবেন এই ব্যাখ্যায় মথুরবাবুর মনের আঁধার দূরীভূত হয়প্রাধানিক রহস্যগ্রন্থে স্পষ্টই বলা হয়েছে, -

“নিরাকারা সাকারা সৈব নানাভিধানভৃৎ

নামান্তরৈর্নিরূপ্যৈষা নাম্না নান্যেন কেনচিৎ”

অর্থাৎ যিনি নিরাকার, তিনিই সাকারদেবী সাকার রূপে মর্ত্যে পূজা গ্রহণ করেছেন, তারপর নিরাকার রূপে ফিরে গিয়েছেন কৈলাসেতার অর্থ সন্তানের সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ নয়মা-সন্তানের চিরমিলনের এই শাস্ত্রীয় তত্ত্বই প্রাঞ্জলভাবে মথুরবাবুকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন ঠাকুর রামকৃষ্ণ

আর দুর্গা পূজার অন্ত চিহ্নিত হয় বিজয়া দশমীর মাধ্যমেপৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, এই দিনেই পিতৃ-আবাস ছেড়ে দেবী পাড়ি দেন স্বামীগৃহ কৈলাসের দিকেএই দিনেই তাই দেবীর প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়

ওঁ গচ্ছ গচ্ছ পরমস্থানং স্বস্থানং দেবী চণ্ডিকে
ব্রজস্রোতা জলে বৃদ্ধৈ তিষ্ঠ গেহে ভূতলে।।
ওঁ দুর্গে দেবী জগন্মাতঃ স্বস্থানং গচ্ছ পূজিতে
সম্বৎসরে ব্যতীত তু পুনরাগমনায় ।।

হে দেবী চণ্ডিকা, হে দেবী দুর্গা, তুমি পরম ক্ষমাশীলাআমার অশেষ অজ্ঞানতার জন্য আমায় ক্ষমা করোআমার ত্রুটিযুক্ত পূজা আরাধনায় ক্ষুব্ধ না হয়ে আমায় বাঞ্ছিত ফল প্রদান করো, হে অম্বিকেদশমী তিথি আগত, ভারাক্রান্ত হৃদয়ে তোমায় বিদায় জানাচ্ছিতুমি গাত্রোত্থান করো, গমন করো তথায়, যথায় পরম শিব বিরাজিতবৎসরান্তে পুনরায় সপরিবারে এসো মাতুমি আনন্দময়ী, তোমার আগমনে যেন দিকে দিকে আবার আনন্দবার্তা ঘোষিত হয়

নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে:

'‘যাও উড়ে নীলকণ্ঠ পাখি, যাও সেই কৈলাসে,

দাও গো সংবাদ তুমি, উমা বুঝি আসে’'

বাংলা সাহিত্যে বার বার এসেছে এই পাখিটির নামনীলকণ্ঠ শিবের আরেক নামসমুদ্র মন্থনের পর ওঠা ভয়ানক বিষের প্রভাব থেকে সৃষ্টিকে রক্ষা করতে সেই বিষ নিজের কণ্ঠে ধারণ করেন মহাদেববিষের জ্বালায় তাঁর গলায় নীলবর্ণ ধারণ করেতাই শিবের আরেক নাম নীলকণ্ঠনীল বর্ণের জন্য নীলকণ্ঠ পাখিকে শিবের দোসর বলে মনে করা হয় হিন্দু ধর্মেদশমীতে দুর্গা প্রতিমার ভাসানের আগে নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ানোর প্রথা চালু হয় এই বিশ্বাস থেকে যে নীলকণ্ঠ পাখি আগে কৈলাসে গিয়ে মহাদেবকে পার্বতীর আগমন বার্তা দেবে

আবার হিন্দু পুরান মতে, দুর্গাপুজোর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক এই পাখিরপ্রচলিত বিশ্বাস, বিজয়া দশমীতে এই পাখি দেখতে পাওয়া খুবই শুভবলা হয়, রাবণবধের আগে এই পাখির দর্শন পেয়েছিলেন শ্রীরামচন্দ্রআবার অনেকের মতে, নীলকণ্ঠ পাখি পথ দেখিয়ে নিয়ে গিয়েছিল রামচন্দ্র তার বাহিনীকেতাই তার দর্শন পাওয়া শুভ বলে ধরা হয়এর ইংরেজি নাম : Indian Roller; বৈজ্ঞানিক নাম: Coracias benghalensisনীলকন্ঠ আকারে প্রায় ৩১ সে.মিমেয়ে পাখি আর ছেলে পাখি দেখতে প্রায় একই রকম বাদামী পিঠ,ডানায় গাঢ় নীল আর আকাশি নীলের খেলা ,লেজের দিকটাতেও তেমনিমাথা,ঘাড়,গলা আর বুক আকাশনীল,চোখ,ঠোঁট কালো আর পা দুখানা হালকা হলুদঅগভীর বন বসবাসের জন্য পছন্দ এদেরপ্রধানত পোকা-মাকড়ই প্রধান খাবার মেন্যু পাশাপাশি ফলমূলও খায়প্রজনন সময় -মার্চ থেকে মেডিম সংখ্যা -- টি

আজ উমার ঘরে ফেরার দিন:

যাই হোক, বিজয়ার যে ছবিটা আমাদের চোখের সামনে ভাসে, তা হলোপ্রতিমার চলে যাওয়াআগমনী গানের সুর ধরে মা দুর্গা আসেন আর বিজয়া গানে দেবী বিদায় নেনমা দুর্গা পুজো পান দেবী রূপে আর বিদায় নেন কন্যারূপে

পুজোর দিনগুলিতে পুরোহিতের মন সর্বগতা চিন্ময়ী দেবতাকে আরাধ্য প্রতিমাতে জাগ্রতরূপে বিরাজমানা চিন্তা করেসহজ কথায় এর নামআবাহনআর সেই চিন্তা থেকে পুরোহিতের মনের নিবৃত্ত হওয়াই বিসর্জন

কিন্তু প্রশ্ন হল, এই দিনটিকেবিজয়া দশমীবলা হয় কেন? কোনবিজয়’-কেই বা চিহ্নিত করে দিনটি? ‘দশমীকথাটির প্রাসঙ্গিক তাৎপর্য সহজবোধ্যআশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের দশমী তিথিতে দেবী কৈলাস পাড়ি দেনসেই কারণেইবিজয়া দশমীনামকিন্তু এই দশমীকে  ‘বিজয়াবলা হয় কেন, তার পৌরাণিক ব্যাখ্যা খুঁজতে গেলে একাধিক কাহিনি সামনে আসেপুরাণে মহিষাসুর-বধ সংক্রান্ত কাহিনিতে বলা হয়েছে, মহিষাসুরের সঙ্গে দিন রাত্রি যুদ্ধ করার পরে দশম দিনে তার বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করেন দেবীশ্রীশ্রীচণ্ডীর কাহিনি অনুসারে, আশ্বিন মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশীতে দেবী আবির্ভূতা হন, এবং শুক্লা দশমীতে মহিষাসুর-বধ করেনবিজয়া দশমী সেই বিজয়কেই চিহ্নিত করে

এছাড়া এই দিন ইন্দ্র বৃত্রাসুরকে যুদ্ধে আহ্বান করে বধ করেছিলেনএই যুদ্ধে বিষ্ণু ইন্দ্রের রথের সারথি ছিলেন আর মরুদ্গমন ছিলেন সহকারীবৈদিক যুগের ইন্দ্রের ওই বৈষ্ণবী শক্তির আশ্রয়ে বৃত্রবিজয়ী লীলাই মহামায়ার পুজোয় অসুর বিসর্জনের এক পদ্ধতিএই পরম্পরা এখনও পালন করা হয় সারা দেশেএই দিন দশেরা উৎসবে অনুষ্ঠিত হয় রাবণবধের অনুষ্ঠানখড়ের তৈরি একটি রাবণের প্রতিমূর্তিকে আগুনে পুড়িয়ে মানুষ নিজের অন্তরের আসুরিক প্রবৃত্তিকে ধ্বংস করে

সিঁদুর খেলা :

বিজয়ার দিনে সিঁদুর খেলা মেয়েদের একটি বিশেষ অনুষ্ঠানএই আচারটি আজ দুর্গাপুজোর একটি অঙ্গ হিসেবে পরিচিতহিন্দু বিবাহ রীতিতে সিঁদুরদান লৌকিক আচার মাত্র হলেও সুপ্রাচীন কাল থেকে বিবাহিত নারীরা স্বামীর মঙ্গলকামনায় সিঁথিতে সিঁদুর পরতেনদেবী দুর্গাও বিবাহিত নারী হিসেবে সিঁদুর ব্যবহার করেনদুর্গা পুজোয় যে যে উপচার দেবীকে দান করতে হয়, তার মধ্যে সিঁদুর রয়েছে‘‘সর্বলোকের রঞ্জন পরমসৌন্দর্যযুক্ত সিন্দুর তিলক তোমার কপালকে মণ্ডিত করুক’’এই বলে দেবীর কাছে প্রার্থনা জানানো হয়

‘ভবিষ্য পুরাণ’- বলা হয়েছে, সিঁদুর হচ্ছে স্বয়ং ব্রহ্মের প্রতীকবিবাহিত নারী সিঁথিতে সিঁদুর দিয়ে পরম ব্রহ্মকে আহ্বান করেন স্বামীর মঙ্গল দীর্ঘায়ু কামনায়পরম ব্রহ্ম শুধু স্বামীকে নয়, দম্পতিকেই সুখ উপহার দেন

‘শ্রীমদভাগবত’- কাত্যায়নী ব্রত উপলক্ষ্যে গোপিনীদের সিঁদুর খেলার বিবরণ রয়েছেএই সিঁদুর খেলা অবশ্য প্রিয়তম কৃষ্ণের মঙ্গল কামনায়সিঁদুরের দেবতা পরমব্রহ্ম সংসারের দুঃখ বাধা কষ্ট দূর করে সুখ উপহার দেনতাই আজকের যুগের বিবাহিত নারীরাও দশমীর দিন সিঁদুর খেলায় অংশগ্রহণ করেন

রাবণ দহন, সঙ্গে দহন নানা রিপুর:

তবে উত্তর মধ্য ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে এই দিনে যে দশেরা উদযাপিত হয়, তার তাৎপর্য অন্যদশেরাশব্দটির উৎপত্তি সংস্কৃতদশহরথেকে, যা দশানন রাবণের মৃত্যুকে সূচিত করেবাল্মীকি রামায়ণে কথিত আছে যে, আশ্বিন মাসের শুক্লা দশমী তিথিতেই রাবণ-বধ করেছিলেন রামকালিদাসের রঘুবংশ, তুলসীদাসের রামচরিতমানস, কিংবা কেশবদাসের রামচন্দ্রিকা- এই সূত্রের সঙ্গে সংযোগ রেখেই বলা হয়েছে, রাবণ-বধের পরে আশ্বিন মাসের ৩০ তম দিনে অযোধ্যা প্রত্যাবর্তন করেন রাম, সীতা লক্ষ্মণরাবণ-বধ রামচন্দ্রের এই প্রত্যাবর্তন উপলক্ষেই যথাক্রমে দশেরা দীপাবলি পালন করা হয়ে থাকেআবার মহাভারতে কথিত হয়েছে, দ্বাদশ বৎসর অজ্ঞাতবাসের শেষে আশ্বিন মাসের শুক্লা দশমীতেই পাণ্ডবরা শমীবৃক্ষে লুক্কায়িত তাঁদের অস্ত্র পুনরুদ্ধার করেন এবং ছদ্মবেশ-মুক্ত হয়ে নিজেদের প্রকৃত পরিচয় ঘোষণা করেনএই উল্লেখও বিজয়া দশমীর তাৎপর্য বৃদ্ধি করে

পাণ্ডবদের দশহরা:

শুধু রামই ননদশহরার দিনটির সঙ্গে জড়িয়ে আছেন পাণ্ডবরাওপাশাখেলায় পরাজিত হয়ে পাণ্ডবরা ১২ বছর বনবাস এক বছরের অজ্ঞাতবাস মেনে নিয়েছিলেনবনবাসের পর অজ্ঞাতবাস শুরু করার প্রাক্কালে তাঁরা বিরাট রাজ্যে প্রবেশ করার আগে একটি শমীবৃক্ষের কোটরে তাঁদের অস্ত্রাদি লুকিয়ে রেখে যানআবার একটি বছর পরে এই বিজয়া দশমীর দিনটিতে ওই কোটর থেকে অস্ত্র বের করে নিজেদের আসল পরিচয় দিয়েছিলেন তাঁরাতাই তারপর থেকে ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে দশহরার দিনটিতে অস্ত্রের পুজো প্রচলিত আছেএদিন পরস্পরকে শমীবৃক্ষের পাতা দিয়ে দুষ্টের উপর বিজয়ের কথা মনে করিয়ে দেওয়ার চলও প্রচলিত

রাম জন্মের আগেই রঘুকুলে পালিত হত দশহরা!

রামের জন্মের বহু আগে থেকেই নাকি রঘুকুলে পালিত গত দশহরার প্রথা! রামের পূর্বপুরুষ রাজা রঘুর আমলের একটি ঘটনা এর জন্য দায়ীরঘুর রাজ্যে ছিলেন দেবদত্ত নামে এক ঋষি, যাঁর পুত্র কৌৎস শিক্ষালাভ করতে যান ঋষি বরতনুর কাছেশিক্ষাশেষে ১৪টি বিষয়ে সুশিক্ষিত কৌৎস যখন গুরুকে জিজ্ঞেস করেন যে, গুরুদক্ষিণা হিসেবে কী চান তিনি, বরতনু স্মিতহাস্যে উত্তর দেন, তাঁর কিছুই চাই না, ছাত্রের সুশিক্ষাই তাঁর কাছে গুরুদক্ষিণার সমান! কিন্তু কৌৎস নাছোড়বান্দা, গুরুদক্ষিণা তিনি দেবেনই! বাধ্য হয়ে একটি অসম্ভব ইচ্ছে প্রকাশ করেন বরতনুতিনি বলেন, ১৪টি বিষয়ে শিক্ষার দক্ষিণা হিসেবে তিনি ১৪০ লক্ষ স্বর্ণমুদ্রা চান তিনিগুরুর ইচ্ছে পূর্ণ করতে কৌৎস যান অযোধ্যায়, দানবীর রাজা রঘুর কাছেকিন্তু সেদিনই ব্রাহ্মণদের দানে সব সোনা দিয়ে দেওয়ার কারণে রঘু কৌৎসর কাছে তিন দিন সময় চানকৌৎস সেই কথা শুনে বিদায় নেওয়ার পর রঘু সোজা চলে যান ইন্দ্রের কাছেইন্দ্র সব শুনে ডেকে পাঠান ধনের দেবতা কুবেরকেইন্দ্রের কথামতো কুবের অযোধ্যা রাজ্যে সেদিন ধনবৃষ্টি শুরু করেনশোনু এবং আপতি গাছের পাতাগুলি থেকে ঝরতে থাকে সোনার মোহর! সেই মোহর একত্রিত করে কৌৎসকে দেন রাজা রঘুছাত্রের কাছ থেকে শুধু ১৪০ লক্ষ স্বর্ণমুদ্রা চেয়েছিলেন বরতনু, বাকিটা তিনি ফিরিয়ে দেন কৌৎসকেকৌৎস তা আবার ফিরিয়ে দেন রঘুকেদানবীর রঘু তা বিলিয়ে দেন তাঁর প্রজাদের মধ্যেসেই দিনটি ছিল বিজয়া দশমীর দিনসেদিন থেকে বিজয়া দশমীর দিন পরস্পরকে শোনু এবং আপতি বৃক্ষের পাতা সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে দেওয়ার চল আছে

হাজারো পৌরাণিক ব্যাখ্যাহাজারো পৌরাণিক মতামতসব কিছুকেই উপেক্ষা করে বাঙালি কিন্তু মেতে ওঠে শুধুমাত্র দুর্গাপুজো নিয়েআজ সেই পুজোর অবসানপ্রত্যেকের চোখে জলআবারো এক বছরের অপেক্ষাদেবী দুর্গার বিদায় দিনে বিষাদের সুরেই 'আসছে বছর আবার হবে' এই আশা নিয়ে মহামায়াকে বিদায় জানিয়ে বলে উঠে, আবার এসো মা, -

“সপ্তমী-অষ্টমী-নবমী আনন্দে মিশে

চলে গেলে দয়াময়ী দশমী তিথিতে

মা-গঙ্গার পথ ধরে অশ্রুজলে ভেসে

হর্ষে-বিমর্ষে ভাসিয়ে সিঁদুরে সিঁথিতে 


ছবি সৌজন্য- Outlook Traveller

 

 

Redirect to Address page

Updating Subscription details

Redirecting...Please Wait