গুরু মানে কি? যিনি প্রবল অন্ধকার থেকে আলোর দিকে হাত ধরে নিয়ে যান, যিনি সেই আলোকময় পথে চলতে শেখান, তিনিই গুরু।
এখন প্রশ্ন জাগবে অন্ধকার ও আলোকময় পথ আমরা চিনব কিভাবে? ভগবান শ্রী কৃষ্ণ বলছেন, “যে আত্মস্বরূপ প্রাপ্ত হলে অপর কিছুই তা থেকে অধিকতর লাভজনক মনে হয় না, তাই যোগ বলে জানবে (অধ্যায় :৬, শ্লোক :২২)।”
ই যোগ হল মানবজীবনের উচ্চতম অবস্থা। মানুষের শরীর এই যোগসাধনার সম্পূর্ণ উপযুক্ত। মানুষের শরীরের আধ্যাত্মিক চক্রগুলির দ্বার নিয়মিত যোগসাধনার মাধ্যমে জপ ধ্যানের মাধ্যমে খুলে যায় । যোগী সেই অবস্থায় নিজেকে এক ও একমাত্র পরমব্রহ্মের সাথে নিজেকে একাত্ম করে নিতে পারেন, ভারতবর্ষের যোগসাধনা এই শিক্ষাই দিয়ে এসেছে।
ADVERTISEMENT
এই পথে অবগাহন করার পদ্ধতি যাঁর মাধ্যমে শিষ্য পরম্পরায় সঞ্চারিত হয় তিনিই গুরু। এই মানবজন্ম তপস্যালব্ধ হলেও জীবনধারণ করে আমাদের অশেষ দুঃখ কষ্ট পেতে হয়। আমাদের একসময় মনে হতে থাকে আমরা এত যে দিলাম, বিনিময়ে কি পেলাম? প্রবল নৈরাশ্য মনকে গ্রাস করতে থাকে। ঠিক এই সময় প্রয়োজন সদ্গুরুর। যিনি এই প্রবল তামসিক অন্ধকার থেকে টেনে বের করে ঈশ্বরের সাথে সাক্ষাৎকার ঘটিয়ে দেন। মানুষ চিনতে পারে, জানতে পারে নিজেকে। বুঝতে পারে আসলে ঈশ্বরই কর্তা, বাকি সব অকর্তা।
ঠাকুর বলছেন, “গুরু হলেন ঘটক। যিনি ভক্তের সাথে ভগবানের দেখা করিয়ে দেন।” এর চেয়ে সহজ সংজ্ঞা আর হয় না। বোধহয় আর কেউই এত সহজ করে গুরুর সংজ্ঞা আর কোনোদিন দিতে পারবেন না ।
গুরুপূর্ণিমার পুণ্যতিথিতে সেই মহাগুরু, যাঁর মধ্যে সমস্ত ভগবান লীন হয়ে আছেন, তাঁকে সশ্রদ্ধ প্রণাম।
0 comments