স্বামীজীর জীবনে ভীষণভাবে রেখাপাত করেছিলেন তাঁর মা,ভুবনেশ্বরী দেবী। সেই যুগে তিনি বিদেশিনী শিক্ষিকার কাছে ইংরাজী শিখেছিলেন। রামায়ণ মহাভারত তিনি নিত্য পাঠ করতেন আর শিশু বিলে মায়ের এই পুরান পাঠ অধীর আগ্রহে শুনতেন । এভাবেই শিশুকাল থেকে তাঁর চরিত্রগঠনের পর্যায়গুলি একে একে তৈরি হচ্ছিল বা বলা যায় ভবিষ্যত এ যে তিনি ‘ঘনীভূত ভারত’ হয়ে উঠবেন তার ভীত রচিত হচ্ছিল।
নারীশিক্ষার উপর স্বামীজী খুব জোর দিতেন। তার প্রধান কারন হিসাবে তিনি বলেছিলেন যে আজ যে নারী শিক্ষিতা হবেন, তাঁর সন্তান ভবিষ্যত এ শিক্ষিত হয়ে উঠবে তার মায়ের শিক্ষায়। যেরকমটি তাঁর নিজের ক্ষেত্রে হয়েছিল। কি যুগান্তকারী চিন্তা ভাবনা। পরবর্তী কালে তিনি সিস্টার নিবেদিতা কে নিয়োজিত করলেন এই দেশে নারীশিক্ষার প্রচারে। শ্রী মার হাতে উদ্বোধন হল বালিকাদের জন্য প্রথম বিদ্যালয়। স্বামীজীর অনেক স্বপ্নের মধ্যে এইটিরও সার্থক রূপদান ও তিনি নিজের চোখে দেখে গিয়েছিলেন দেহত্যাগের আগে।
এ কথা সত্যি যে শিশুর প্রথম শিক্ষক হলেন তার মা। ছোট থেকে একটি শিশু যা দেখে যেরকম ভাবে দেখে, অর্থাৎ যেরকম পরিবেশে বড় হয় পরবর্তীতে তার চরিত্রের মধ্যেও ঠিক সেই সেই পূর্ববর্তী ঘটনা সমূহের প্রতিফলন দেখা যায়। তবে সুশিক্ষা আর কুশিক্ষার মধ্যে তফাত তো নিশ্চই আছে। মানুষের মুখের ভাষা ঠিক করে দেয় সে মনুষ্যত্বের মাপকাঠিতে ঠিক কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। আজকালকার দিনে মানুষে মানুষে প্রবল হানাহানির দিনে মার্জিত রুচির অভাব দেখে খুব মনে হয় যে ভুবনেশ্বরী দেবীর মত মা ছিলেন বলেই আমরা স্বামীজীর মত ছেলে পেয়েছি। ভারতবর্ষে প্রত্যেক ঘরে তাঁর মত মা আসুন, তাহলে আমাদের গর্ব ধরে রাখার জায়গা থাকবে না।
ADVERTISEMENT
0 comments