মা

মা

মাকে নিয়ে আমি আর কি লিখতে পারি? শুধু বলতে পারি, আমি মাকে ভালোবাসি।

মাকে কে না ভালোবাসে? আমাদের জন্ম থেকে বড় হয়ে ওঠার প্রতিটি ক্ষণে মা ই তো আমাদের পরম বন্ধু। কত ত্যাগ স্বীকার করে তাঁরা আমাদের বড় করে তোলেন, মানুষ করে তোলেন, সেইজন্য তো প্রাচীন শাস্ত্রে মায়ের স্থান 'স্বর্গাদপী গরিয়সী', অর্থাৎ কিনা স্বর্গের চেয়েও মহান। এ বন্ধন আত্মিক।

আর আমাদের মা, আমাদের ঠাকুমা, পূর্বপুরুষ, আমাদের উত্তরপুরুষ হিসাবে যাঁরা যাঁরা আসবেন, তাঁদের সবার এক চিরকালীন 'মা' আছেন। সেই মা, যিনি শৈশবে ক্ষুধাতুর মানুষের পাতের গরম খিচুড়ি জুড়িয়ে দেওয়ার জন্য বাতাস করতেন। সেই মা, যিনি একলা পথে ডাকাত কে 'বাবা' বলে ডেকে তার অন্তর পরিবর্তন করতে পারেন। সেই মা, যিনি নিজের স্বামীকে নির্দ্বিধায় বলতে পারেন, তিনি তাঁর ইষ্টপথে তাঁকে সাহায্য করতে এসেছেন। সেই মা, যিনি বলতে পারেন তাঁর কোনো ভক্তকে, 'কি? আমার পেটে হও নি? তবে আর কার পেটে হয়েছো? আমি ছাড়া আর মা কে আছে?' সেই মা, যিনি স্বামী বিবেকানন্দকে বাধা দেন বেলুড় মঠের জমি বিক্রি করতে, কেনোনা স্বামীজী স্থির করেছিলেন প্লেগ আক্রান্ত মানুষের সেবার জন্য অর্থ দান করবেন মঠের জমি বেচে,  বলেন এই মঠ থেকে আধ্যাত্মিকতার প্লাবন বইবে, স্বামীজী পারেন না জমি বিক্রি করতে, স্বামীজী এক কথায় মেনে নেন মায়ের আদেশ, এতটাই মায়ের ব্যক্তিত্ব।

ADVERTISEMENT

সংঘজননী তিনি, বিশ্বপ্রসবিনী। অথচ এই মা ই জয়রামবাটিতে রাতের বেলায় কুঁড়ের দাওয়ায় খুন্তি দিয়ে মাটি থেকে পাথর খুঁড়ে তোলেন, বলেন কোনো সন্তানের পায়ে লেগে যাতে রক্তপাত না হয় সেইজন্য তাঁরই তো এই কাজ। নাট্য আচার্য গিরিশচন্দ্র ঘোষ জয়রামবাটি গিয়ে রোজ বিছানায় কাচা চাদর পান, একদিন ভোরে আবিষ্কার করেন এই কাজের হোতা স্বয়ং মা, সন্তানের জন্য রোজ ভোরে চাদর কেচে দেন। এমন তিনি মা, ঠাকুরের কাছে সটান দাবী করেন যে তাঁর কিছু চাই না, শুধু তাঁর সন্তানেরা 'রামকৃষ্ণ নাম' নিয়ে বেরোলে যেন রাস্তায় সুরক্ষিত থাকে। অভয় দেন, তিনি 'মা' থাকতে বিধাতাপুরুষেরও সাধ্য নেই আমাদের ক্ষতি করে। তিনি ছাড়া সৎ আর অসৎ এর মা ই বা একসাথে কে হতে পারেন?

তাঁর পবিত্র মূর্তির সামনে বেশিক্ষন তাকাতে পারি না, শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে। তবু যে কোনো বিপদে, অস্তিত্বের সংকটে, রোগে, নিদ্রায়, জাগরণে শুধু তাঁকেই ডাকি, ঠাকুরেরও আগে। জানি, তিনি আছেন সবটা জুড়ে, সর্বত্র, তিনি ছাড়া বস্তুত আর কেই বা আছেন?

মায়ের শুভ আবির্ভাব দিবস  আজ। মা তুমি এভাবেই আমার সাথে থেকো। শতকোটি প্রণাম।

 

স্বদেশ টাইমস এখন টেলিগ্রামেও। সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন।

স্বদেশ টাইমস ফেসবুক পেজ লাইক করুন।

Redirect to Address page

Updating Subscription details

Redirecting...Please Wait