দোস ডেজ
প্রথম পর্বের লিঙ্ক
দ্বিতীয় পর্ব
পিউকে দেখেই জিনির মুখটা বিকৃত হাসিতে ভরে উঠল। ওকে টিস করে সে একটা স্যাডিসটিক প্লেসার অনুভব করে! ফট করে ওর ওড়নাটা কেড়ে নিয়ে জিকোর হাতে দিয়ে গান গাইতে লাগলো....
"আ গই হে বেহেনজি
থামকে বৈঠো দিলকো জি
আ গই হে বেহেনজি...."
জিকো খ্যা খ্যা করে আবার সেই বিশ্রী হাসিটা হেসে উঠল।
তাদের ভাবভঙ্গি আর পিউর চোখ ছলছল দেখে ক্যান্টিনের আরো বেশ কিছু ছেলেমেয়ে হাসতে লাগলো।
আরুষির সমস্ত পরিবেশ একদম অসহ্য লাগলো। ইচ্ছা করছিল জিকোকে ঠাস করে একটা থাপ্পর মারে। কিন্তু কেন জানি এদের সাথে লাগতে তার ইচ্ছা করেনা। জিকোর হাত থেকে ওড়নাটা কেড়ে নিয়ে আর জিনির দিকে একটা বিষদৃষ্টি নিক্ষেপ করে, সবে বেরিয়ে আসতে যাবে..
ADVERTISEMENT
এমন সময়ে ব্ল্যাক টি আর জিন্স, চুলে স্পাইক আর কালার, আর দু কানে দুল পরিহিত স্যাম প্রবেশ করল ক্যান্টিনে! চেহারাটা দেখলেই মাথা গরম হয়ে যায় আরুষির। লোভাতুর চোখে আরুষির কুর্তির ওপরভাগে তাকিয়ে বলল....
"কেন তোরা ম্যাডামের মাথা গরম করাচ্ছিস বলতো?"
তারপর জিভে ঠোঁটটা একবার বুলিয়ে নিয়েই বলল....
"তুমি ওদের কথায় কিছু মনে কোরো না, ওরা একটু মজা করতে ভালবাসে। আর পিউ তো আমাদের বন্ধুই.. বন্ধুদের মধ্যে অমন মজা চলে!"
আরুষির ইচ্ছা হল বলে কোন বন্ধুরা এরকম মজা করতে গিয়ে ওড়না খুলে নেয় গা থেকে?? কিন্তু মুখে বলল....
"হ্যাঁ, তা ঠিকই বলেছো! বন্ধুদের মধ্যে সবরকমই চলে।এই ধরো এখন আমার যেমন ইচ্ছা করছে, তোমাদের এই উগ্র বান্ধবীটিকে একটা ঠাঁটিয়ে থাপ্পড় মারতে, মারবো??"
পিউ চমকে উঠে আরুষির হাত চেপে ধরল, জিনি প্রায় মারমুখী, স্যাম কিছু বলতে যাবে.. ক্যান্টিন পুরো গরম.. তার আগেই একঝলক তাজা হাওয়ার মতোন একটা বছর কুড়ির দারুণ হ্যান্ডসাম ছেলে এসে ঢুকল ভিতরে। সাথে সাথে ক্যান্টিনের প্রায় অর্ধেক মেয়েরই নজর ওইদিকে। আরুষির পেটে আবার সেই গুরগুর শুরু হল। সে খেয়াল করল রোহিতের প্রবেশে পরিবেশ আশ্চর্যজনক ভাবে ঠান্ডা হয়ে গেল। জিকো উঠে দাঁড়িয়েছিল, আবার ধপ করে বসে পড়ল.. স্যাম টেবিলের উপর উঠে বসেছিল, নেমে দাঁড়ালো.. জিনির মুঠো করা হাত খুলে গেল.. আর পিউও তার কান্না ভুলে হাঁ করে তাকিয়ে রইল। রোহিত জিনিকে ধরে জোর করে বসিয়ে দিল....
"কি যে করিস না তোরা বাচ্চাদের মতোন.. দেখ তো সবাই এইদিকেই তাকিয়ে আছে। কি এমব্যারেসিং! আর কদিন বাদেই কলেজ ফেস্ট.. সেটা কি ভুলে গেছিস নাকি?? জিনি উই নিড আ লট অফ প্র্যাকটিস ম্যান, ডোন্ট ইউ থিনক দ্যাট? চলো আই ওয়ান্ট এভরিওয়ান এট আওয়ার ফেভ প্লেস রাইট আফটার কলেজ, ওকে?? এন্ড ইউ বিউটিফুল লেডি উড লাভ ইট ইফ ইউ জয়েন....!!
পিউ প্লিজ ব্রিংগ হার!"
পিউ বাধ্য মেয়ের মতোন ঘাড় নাড়লো। এমনিতেও রোহিতের ম্যাজিকাল পার্সোনালিটি এড়ানোর ক্ষমতা বিশেষ একটা কারুর নেই, কি ছেলে, কি মেয়ে! আরুষির মনে তখন হাজার প্রজাপতি উড়ে বেড়াচ্ছে। তার উদ্দেশ্যে সম্বোধনটাই বারবার মনে পড়ছে.. 'বিউটিফুল লেডি'...
স্যামের কথাঃ পুরো নাম শ্যামসুন্দর আইচ। গ্রামের ছেলে, পরিবারের সবাই এখনো ওখানে। বাবা গ্রামের স্কুলটিচার। গ্রামের বাড়িতে বাবা, মা, এক বোন। এখন সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে কমার্স পাস, ফার্স্ট ইয়ারেই অনার্স কেটে গেছে। প্রথম যখন এসেছিল.. একদম অন্যরকম ছিল.. এখন অনার্সের মতোন পড়াশুনার পাটও মোটামুটি চুকিয়ে দিয়েছে। রোহিতের বাড়িতেই থাকে পি জির মতোন.. এই গ্রুপের বাইরেও বেশ কিছু বন্ধু আছে তার। বলাই বাহুল্য খুব ভাল গ্রুপ নয়.. রোহিতের অনেক বারণ সত্বেও তাদের সাথে মেশা সে বন্ধ করেনি। 'ডার্ক ওয়েস অফ লাইফ' তাকে বেশী এট্রাক্ট করে!
ক্রমশঃ
দোস দেজ - তৃতীয় পর্বের লিঙ্ক
0 comments