প্রতিযোগিতার গল্প – পেত্নীর পিকনিক

প্রতিযোগিতার গল্প – পেত্নীর পিকনিক

আসানসোলের কাল্লা রোডের শ্মশানে বসে গল্প করছে দুটো পেতনী। একজনের নাম লেঙরী আরেকটার নাম হ্যাংলা। দুজনেরই সুইসাইড কেস। সেজন্য চট করে মুক্তি হয় নি। লেঙরী বলল’দেখ ভাই হ্যাংলা কেমন শীত পড়েছে। সবাই জমিয়ে যাচ্ছে পিকনিক করতে। আমার ও খুব ইচ্ছে করে যেতে। হ্যাংলা পেত্নী বলল ‘হম ঠিক বলেচিস তুই। তা গেলেই হল। যাই চল’। লেঙরী পেতনী বলল’কিন্তু আমরা যে ভূত যোনি। কিভাবে যাব রে!’। হ্যাংলা রেগে গিয়ে বলল ‘ওই তো তোর দোষ। ভুলে গেলি আমরা মানুষের রূপ ধরতে পারি। চল শহরে দেখে আসি।’

দেরী না করে আসানসোল শহরের উদ্দেশ্য সূক্ষ্ম দেহে রওনা দিল ওরা ।উড়তে উড়তে প্রথম হ্যাংলা র চোখে পড়লো আসানসোল শহরের মাঝখানে বাজারের কাছে একটা সাইনবোর্ড।সেখানে লেখা আছে ‘আনন্দ সংবাদ! আনন্দ সংবাদ! যাঁরা পয়লা জানুয়ারি পুরুলিয়া জয়চন্ডী পাহাড়ে পিকনিক করতে যেতে চান তাঁরা আমাদের অফিসে তাড়াতাড়ি যোগাযোগ করুন ‘।নীচে অফিসের ঠিকানা দেওয়া ছিল ।অফিস আসানসোলে ক্যাথলিক চার্চের কাছেই ।লেঙরীকে সেটা দেখাতেই দুজনে অফিসের সামনে হাজির হল ।সুন্দরী আধুনিকার বেশ ধরে হিল তোলা জুতো খটমট করে ঢুকে গেল অফিসে।

ADVERTISEMENT

আচমকা দুজন স্মার্ট সুন্দরী কে অফিসে ঢুকতে দেখে চমকে গেলেন প্রভাত রায় ।তিনি ই আসলে পিকনিকের উদ্যোগ নিয়েছিলেন ।চোখ কপালে উঠে গেল ওদের সাজ দেখে ।লেঙরী গিয়ে কথা শুরু করল’বাইরে দেখলাম আপনারা পিকনিকের আয়োজন করেছেন ।আমরা দুই বান্ধবী যেতে চাই ।এ ব্যাপারে কিছু বললে ভাল হয় ।’প্রভাত রায় কপালের ঘাম মুছে বললেন ‘বসুন না! বলছি ।হম ঠিক বলেছেন ।বাস ছাড়বে ঐ দিন সকাল সাতটা নাগাদ ।রান্না র সরঞ্জাম নিয়ে কিছু লোক আর রাঁধুনী আগে থেকেই চলে যাবে আর রান্নার ব্যবস্থা করবে ।যারা পিকনিকে যাবে তাদের নিয়ে আমি আর ড্রাইভার রওনা দেব ।বাসে একবার টিফিন দেব ।ওখানে যাবার পর জলখাবার দেওয়া হবে ।পার হেড পাঁচশো টাকা করে ধরা হয়েছে ।’হ্যাংলা পার্স খুলে দুটো পাঁচশো টাকার নোট বের করল ।প্রভাত রায় বললেন ‘আপনাদের নাম? ‘এবার দুজনে বিপদে পড়ে গেল ।কারন বেঁচে থাকতে লেঙরীর নাম ছিল রিমি দাস আর হ্যাংলা র নাম ছিল শতাব্দী সরকার ।কি আর করা যাবে ।ঐ নাম দুটো বলে টাকা দিয়ে রিসিট নিয়ে দুজনে শ্মশানে ফিরে এল ।

নির্দিষ্ট দিনে সবাই এসে হাজির জয়চন্ডী পাহাড়ে পিকনিক করতে যাবার জন্য ।কিন্তু দেখা নেই রিমি দাস আর শতাব্দী সরকারের ।সময় বয়ে যাচ্ছে ।লোকে অস্থির হয়ে যাচ্ছে ।প্রভাত রায় বারবার ঘড়ি দেখছেন ।দুজনেরই দেখা নেই ।এরমধ্যেই বনমালী ঘোষ নামে এক ব্যক্তি বলল’চলুন দাদা ।ওনারা মনে হচ্ছে আসবেন না ।দেরী করে কি লাভ! ‘প্রভাত রায় বললেন ‘একটু ধৈর্য ধরুন ।আসবে ঠিক ।’আরো আধঘন্টা অপেক্ষা করেও যখন ওরা এল না তখন শেষ পর্যন্ত বাস ছাড়তেই হল।

বাস ছাড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই লেঙরী কে নিয়ে হ্যাংলা এসে হাজির হল ।তারা এসে দেখে বাস নেই ।আশেপাশে দুচারজন কে জিজ্ঞেস করলে তারা বলল’এই তো আধ ঘণ্টা আগে বাস ছেড়ে চলে গেছে ।’হ্যাংলা বলল’দেখ লেঙরী বাস তো ধরতে হবে ।চল আমরা  সূক্ষ্ম দেহে রওনা দিয়ে বাসে উঠে বসি ‘।দুজনে সূক্ষ্ম দেহে উড়ে চলল বাসের দিকে ।

বাসে পিকনিকের লোকজন বসে গল্প করছে ।কেউ বা মোবাইল দেখছে। নিজের হাতে টিফিন দিচ্ছেন প্রভাত রায় ।সবাই কে দিতে দিতে বাসের শেষে র দিকে সিটের কাছে এসে চমকে গেলেন ।দেখলেন শতাব্দী আর রিমি পাশাপাশি বসে গল্প করছে ।’আপনারা কখন উঠলেন গো!দেখলাম না তো উঠতে ।’শতাব্দী ওরফে হ্যাংলা তার সানগ্লাস কপালের ওপর তুলে বলল’সেকি মশাই! আপনার সামনে দিয়ে তো উঠে বসলাম আর বলছেন কিনা দেখেন নি।’এই বলে দুজনে খুব হাসতে লাগল ।প্রভাত রায় কিছু টা ধাক্কা খেলেন ।যাইহোক মাথা থেকে ও সব ঝামেলা ঝেড়ে ফেলে টিফিন দিতে থাকলেন ।

লেঙরী আর হ্যাংলা বেশ খোশমেজাজে গল্প করছিল ।হঠাৎই হ্যাংলা লেঙরী কে বলল’এই লেঙরী ঐ বৌটা কে দেখ।’বৌটা আর কেউ না ।বনমালী ঘোষের বৌ।একমনে টিফিনে দেওয়া কেক আর প্যাটিস খাচ্ছে ।লেঙরী বলল’বাবা রে ঠিক যেন হাতির বাচ্চা ।তেমনি সাজগোজ!দাঁড়া একটু রগড় করি ওর সাথে ‘।হ্যাংলা বলল’হম শুরু করে দে।’দুজনে মিলে অদৃশ্য হাত দিয়ে বৌটা কে কখনো সুড়সুড়ি কখনো কাতুকুতু দিয়ে অস্থির করে তুলল ।কখনো চিমটি কাটতে থাকল ।বৌটা বেচারা অস্থির হয়ে এদিক সেদিক করতে লাগল ।

এসব দেখে পাশে বসে থাকা তার স্বামী বনমালী বলল’কি হল কি তোমার? এজন্যই এসব লোককে নিয়ে যেতে নেই কোথাও ।’বৌ বেচারা বলল’না গো! মনে হচ্ছে কেউ কখনো সুড়সুড়ি দিচ্ছে ।কাতুকুতু দিচ্ছে ।চিমটি কাটছে ।’বনমালী বলল’হম ভূতে কাটছে।যত্তসব! ‘এমন সময়ে কে যেন বনমালী র মাথার চুল ধরে টেনে দিল ।আর গালে বসালো এক থাপ্পড়।প্রচন্ড রেগে গিয়ে সে বললো ‘রায় বাবু বাস থামিয়ে দিন ।আমরা নেমে যাবো।এসব অসভ্যতা সহ্য করতে পারছি না ।’সত্যি সবাই বিষয়টা নিয়ে গুঞ্জন শুরু করে দিল ।এদিকে লেঙরী আর হ্যাংলা মুখ টিপে হাসছে ।অগত্যা প্রভাত রায় হাতজোড় করে বললেন ‘আমি বুঝতে পারছি বাসে কেউ বা কারা আছেন যারা ম্যাজিক জানেন ।দয়া করে এসব করবেন না ।আজ আমরা আনন্দ করতে এসেছি ।এই আনন্দ কারো চোখের জল যেন না হয়ে যায় ।বন্ধ করুন এসব’।তাঁর কথা ভেবে ই ওরা এসব বন্ধ করে দিল।

হৈচৈ করে বাস এসে পৌঁছল জয়চন্ডী পাহাড়ে পিকনিক স্পটে ।দেখা গেল যারা আগে থেকেই এসেছে তারা সুন্দর ব্যবস্থা করে রেখেছে ।বসার জন্য কম্বল পাতা হয়েছে ।চেয়ার টেবিল পেতে খাবার ব্যবস্থা করা হয়েছে ।হেড রাঁধুনী তরমুজের বীজের মত একরাশ দাঁত বের করে হেসে সবাই কে Welcome করল ।একটু বিশ্রাম নিয়ে সবাই মটরশুঁটির কচুরি, আলুর দম আর মিষ্টি খেল ।তারপর কেউ বসল কেউ গেল বেড়াতে ।লেঙরী আর হ্যাংলা দুটো চেয়ার দখল করে বসল ।কয়েক টা চ্যাংড়া ছেলে ওদের সাথে গায়ে পড়ে আলাপ করতে এল ।ওরাও কখনো হেসে কখনো বা চোখ টিপে ওদের সাথে মজা করতে লাগল ।

বেলা সাড়ে বারোটা ।রান্না প্রায় শেষের দিকে ।মাংস রান্নার সুগন্ধ সবার নাকে এসে লাগছে ।হ্যাংলা পেত্নী বলল ‘কি রে লেঙরী সুগন্ধ নাকে আসছে? ‘লেঙরী বলল’হম দারুণ ।দেরী কিসের! চল চুপচাপ সাবাড় করে দি ‘।দুজনে সূক্ষ্ম দেহে গরম মাংসের কড়াই তে ঢুকে গেল ।পেতনী দের খেতে কতক্ষণ? পাঁচ মিনিটে সাফ করে দিয়ে চুপচাপ বসে রইল ।

‘ঠাকুর রান্না কতদূর? ‘প্রভাত রায় জিজ্ঞেস করলেন ।ঠাকুর বলল’সব হয়ে গেছে ।শুধু একটু চেখে দেখতে হবে ।”চল দেখে আসি ।’এই বলে প্রভাত রায় উঠে দাঁড়ালেন ।মাংসের কড়াই এর ওপর চাপা দেয়া ঢাকা টা খুলে বিকট চিৎকার করে ঠাকুর হাঁক দিল’বাবু শিগগিরই আসুন ।মাংস গায়েব ‘।’বলে কি’বলে তাড়াতাড়ি ছুটে এলেন তিনি ।সঙ্গে আরো কিছু লোক ।সবাই দেখে হতবাক ।কড়াই এর ওপর ঢাকা ঠিক আছে ।মাংস নেই ।সব চাঁচাপোঁছা ।প্রভাত রায়ের কানে কানে বনমালী বলল’এটা ঐ মুখপোড়া রাঁধুনী র কাজ ।পয়সার জন্য অন্য কোন পিকনিক পার্টি কে বেচে দিয়েছে দেখুন গে’।কিন্তু প্রভাত রায় ভাবছিলেন অন্য কথা।মাংস যখন কড়াই তে দেওয়া হচ্ছিল তিনি তখন সেখানে ছিলেন ।তাহলে? আবার ভাবলেন হতেও পারে ।হয়ত বেচে দিয়েছে তাঁর ক্ষণিকের অনুপস্থিতে।যাই হোক ব্যবস্থা কিছু তো একটা করতে হবে ।এতগুলো মানুষ আছে ।তিনি হেড রাঁধুনী কে ডেকে বললেন ‘ঠাকুর এখানে কোথায় বাজার আছে জানো বা গ্রাম যেখানে মাংস পাওয়া যাবে? ‘ঠাকুর ঘাড় নেড়ে বলল ‘হম বাবু বাজার আছে ।কাছে সাঁওতাল দের গাঁ আছে’।’চলো আমার সাথে ‘এই বলে দুজনে রওনা দিলেন সেই বাজারের উদ্দেশ্য ।

হঠাৎই হ্যাংলা র চোখে পড়লো টেবিলের উপর রাখা হয়েছে সারি সারি দই আর মিষ্টি র ভাঁড়।তাদের গায়ে লেবেল করা হয়েছে ‘সেন মহাশয় মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, রেলপার আসানসোল ‘।সঙ্গে সঙ্গে সে লেঙরী কে দেখালো ।দুজনেরই জিভে জল চলে এল।লেঙরী কে বলল’দেরী করিস না লেঙরী ।আসানসোলের বিখ্যাত দোকানের দই আর মিষ্টি ।চল ঝাঁপিয়ে পড়ি।’আর কিছু বলতে হল না ।দুজনে অদৃশ্য হয়ে ঢুকে পাঁচ মিনিটের মধ্যে সমস্ত দই আর মিষ্টি খেয়ে ফেলল ।তারপর আবার মানুষ সেজে চুপচাপ বসে মজা দেখতে লাগলো ।

বিকেল চারটে বাজে ।পিকনিক পার্টির ভাগ্য ভালো মাংস পাওয়া গেছে ।অভিজ্ঞ রাঁধুনী র তৎপরতার কারনে রান্না হয়ে গেছে ।তবে দেরি হল কারণ মাংস কিনে রান্না করতে দেরি হল।সবার জোর খিদে পেয়েছে ।সবাইকে খেতে বসতে বলা হল ।সবাই খাচ্ছে ।রাঁধুনী দের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে প্রভাত রায় ও বনমালী পরিবেশন করছেন ।প্রভাত বাবু রিমি আর শতাব্দীকে জিজ্ঞেস করলেন ‘রান্না কেমন হয়েছে? ‘দুজনে ঘাড় দুলিয়ে বলল’খুব ভালো ‘।

খাওয়া প্রায় শেষের দিকে ।এবারে ঠাকুর গেল দই আর মিষ্টি আনতে ।হঠাৎই সে কেঁদে ফেলল ।সবাই অবাক!মিষ্টি আনতে গিয়ে কান্না র কি হল!প্রভাত রায় হন্তদন্ত হয়ে এলেন ।তাঁর ও চোখ কপালে উঠে গেল ।দই মিষ্টির ভাঁড়ের ওপরে শালপাতার মোড়ক আর দোকানের নামের লেবেল ঠিক আছে কিন্তু ভেতরে সব ফাঁকা ।এটা কিভাবে সম্ভব? এবার কিন্তু প্রভাত রায়ের সন্দেহ  রাঁধুনী ঠাকুর এর ওপর হল না ।তিনি বুঝে গেলেন তাঁদের মধ্যে কেউ বা কারা  যে ম্যাজিক জানে ।

তিনি সবার উদ্দেশ্যে হাত জোর করে বললেন ‘আজ আমরা সবাই আনন্দ করতে এসেছি ।কিন্তু আসানসোল থেকে  বাস ছাড়ার পর থেকে যে সব ঘটনা ঘটেছে এখনো অবধি জানি না ভবিষ্যতে ঘটবে কিনা -সেগুলো খুব রহস্য জনক।যে বা যারা এই কাজ করে চলেছেন দয়া করে আমার কথা ভাবুন ।আমার সম্মানের কথা একটু চিন্তা করুন ।লজ্জাতে মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে আমার ।এভাবে অসম্মান করবেন না ‘এই বলে চশমা খুলে কেঁদে ফেললেন তিনি ।

শীতের বিকাল ।সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে ।তখনই সবাই দেখল একটা ভয়াবহ দৃশ্য ।শতাব্দী আর রিমি যেখানে বসে ছিল সেখানে বসে রয়েছে দু’টি নরকঙ্কাল ।শতাব্দী আর রিমি যেন কঙ্কালের রূপ ধরেছে।তাদের দেখে সবাই ভয়ে কাঁপতে শুরু করল।অনান্য পিকনিক পার্টি চলে গেছে ।এ অবস্থাতে ভয় পাওয়া স্বাভাবিক ।কিন্তু নরকঙ্কাল দুটি বলল’আমাদের আসল নাম হ্যাংলা আর লেঙরী ।কয়েকবছর আগে আমরা শতাব্দী আর রিমি নামে পরিচিত ছিলাম ।আমরা আত্মহত্যা করেছিলাম বলে আমাদের গতি হয় নি ।প্রেতজীবনে আসার পর ও আমাদের শখ বা ইচ্ছা গুলো মরে যায় নি ।খুব ঈচ্ছা ছিল পিকনিকের ।তাই মানুষ সেজে এসেছিলাম ।ঠাকুর বা প্রভাত রায়ের কোন দোষ নেই ।মাংস, দই, মিষ্টি আমরাই খেয়েছি সূক্ষ্ম দেহ ধরে ।রায় বাবুর অনেক টাকার লোকসান হয়েছে ।আমরা ক্ষতিপূরণ দিয়ে যাচ্ছি ।’এই বলে তারা হাওয়া তে মিলিয়ে গেল ।

সবাই অবাক হয়ে গেল এই ঘটনা তে ।প্রভাত রায় দেখলেন ওরা যেখানে বসেছিল সেখানে পড়ে আছে নোটের বান্ডিল ।তিনি গুনে দেখলেন চল্লিশ হাজার টাকা ।সবার মধ্যে গুন গুন শুরু হয়ে গেল ।শুধু প্রভাত রায় চুপ করে চিন্তা করতে লাগলেন এবার পিকনিকের আয়োজন করতে হলে ভালো করে বাজিয়ে নিতে হবে কে মানুষ কে ভূত ।না হলে বিশাল ঝামেলা ।যাক তবু একটা অভিজ্ঞতা হল পেত্নীর সাথে পিকনিক করে ।

খাওয়া দাওয়া শেষ করে জিনিসপত্র গুছিয়ে সবাই কে নিয়ে বাস রওনা দিল আসানসোলের দিকে।

(সমাপ্ত)

Redirect to Address page

Updating Subscription details

Redirecting...Please Wait