অনন্ত প্রেম (প্রথম পর্ব)

অনন্ত প্রেম (প্রথম পর্ব)

ক্রিং ক্রিং
-হ্যালো! কে বলছেন? 
-তিয়াসা? চিনতে পারছিস? 
-উম, ঠিক খেয়াল পড়ছে না! 
-তিয়াসা তুই আমাকে,আমাকে চিনতে পারছিসনা? 
-ওয়েট! লেট মি গেস! 
-হ্যা বল,তোকেই বুঝতে হবে! 
-খুব যদি ভুল না করি স্নেহা? রাইট?  ওহ ইয়া, স্নেহা,হোয়াট!! স্নেহা তুই? তুইই? 
-হিঃ হিঃ! যাক চিনতে পারা গেলো তবে? -হোয়াট আ সারপ্রাইস গার্ল! এতদিন পরে মনে পড়লো বেস্টফ্রেন্ড কে? হুহঃ! 

-আমার তো তাও মনে পড়লো! তুই তো ফার্স্টে আমাকে চিনতেই পারিসনি! 
-তাই কি? বিদেশে গিয়ে বেস্ট ফ্রেন্ড কে ভুলে কে গিয়েছিলো শুনি? 
-ভুলে মোটেও যাইনি বুঝেছিস? কাজের চাপে কন্ট্যাক্ট করা হয়ে ওঠেনি! তুইও তো করিসনি হুহঃ! 
-আমি কি করে করতাম! আমার কাছে কি তোর ওখানের নাম্বার ছিলো? 
-সরি রে! -হ্যা, এখন সরি বলা হচ্ছে! কতদিন বলতো? দীর্ঘ ৭ বছর! পারলি কি করে আমাদের সাথে, বিশেষ করে আমার সাথে যোগাযোগ না করে থাকতে? এতো বছরে একবারও আমার কথা মনে পড়লো না? 
-পড়েছে রে, মনে পড়বেনা তাও হয়? 
-আচ্ছা, এখন তুই কোথায়? 
-সেটা বলতেই তো কল করলাম সোনা! আমি এখন কোলকাতায়! কতদিন দেখা হয়নি, চল না আজ মিট করি! 
-সিরিয়াসলি? তুই এখন কোলকাতায়!! ওয়াও! কখন বল কখন! কোথায় ? -আমাদের দুজনের সেই সিক্রেট জায়গায়? উঃ? -আচ্ছা, গঙ্গার ধারে, বল কখন আমি পৌঁছে যাচ্ছি! -ওকে, বিকেল ৫টায়! ডান? 
-ডান! আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না, তোর সাথে এতো এতো দিন পরে দেখা হতে চলেছে! ওয়াও! তোকে আমার অনেক অনেক কথা বলার আছে রে! 
-সিরিয়াসলি রে! আমিও খুব এক্সাইটেড! আমারো অনেক কিছু শোনার আছে! 
-ওকে, দাঁড়া চটপট হাতের কাজ গুলো শেষ করে নিই! -হ্যা, আমিও! চল বাই! বিকেল পাঁচ টা! টাটা! -টা টা! 
দুজনেই ফোন টা রেখে দুজনের হাতের কাজ গুছিয়ে রেডি হতে থাকে বেস্ট ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করার আনন্দে! দুজনেরই তো দুজনকে অনেক কথা বলার আছে! অনেক প্রশ্ন জানতে চাওয়ার আছে! বহু কথা শেয়ার করার আছে! 

স্নেহা আর তিয়াসা, দুই পরম বন্ধু! দুজনের বন্ধু্ত্ব যতটাই গাঢ় দুজনের স্বভাব ঠিক ততোটাই আলাদা! একজন ডান দিক পছন্দ করে তো অন্য জন বাম দিক, একজন শাহরুখের ফ্যান হলে অন্যজন আমির এর, একজন ভালোবাসায় ,বিয়ে, সংসারে বিশ্বাস করলে অন্যজন ফ্লার্টিং লিভিং এ বিশ্বাসী!  হ্যাঁ , এতটাই আলাদা হওয়ার পরেও ওদের বন্ধুত্বে কোনও খাদ ছিলো না, দুজনেই দুজনের মতামত কে যথেষ্ট সম্মান করতো, আর ওদের বন্ধুত্বের আসল ভিত ছিলো সাহিত্য; ওরা দুজনেই সাহিত্য ভালোবাসতো, রবীন্দ্রনাথ ওদের বন্ধুত্বের সেতু গড়ে দিয়েছিলো, আর সেই সেতু দিয়েই ওদের বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিলো!

ADVERTISEMENT
Tuhu Momo Video Teaser
দুজনেই স্কুল জীবনের বন্ধু! স্কুল জীবনে ওদের একে অপরের সাথে এতো ভাব না থাকলেও পরে যখন এক সাথে কলেজ এ সেম ডিপার্টমেন্ট এ ভর্তি হয়, ইংলিশ এ অনার্স নিয়ে যাদবপুরে, তখন থেকে ওদের বন্ধুত্ব অন্য মাত্রা পায়! একসাথে কলেজ যাওয়া, এক সাথে কলেজ বাঙ্ক মেরে সিনেমা যাওয়া, এক সাথে বসে রবি ঠাকুরের গান গাওয়া, একসাথে বসে কবিতা পাঠ, গঙ্গার ধারে বসে রাত পর্যন্ত নৌকার পাল গোনা, একসাথে তারা দেখা, এক টিফিন বক্স শেয়ার করে টিফিন খাওয়া, ক্রমেই ওরা একে অপরের পরিপূরক হয়ে ওঠে! ওদের বন্ধুত্ব নিয়ে তখন অনেকেই হিংসা করতো! কিন্তু কোনো পরিস্থিতিতেই কেউ ওদের বন্ধুত্বে চির ধরাতে পারেনি! স্নেহা ছিলো খুব শান্ত নম্র, বেচারি ডানপিটে তিয়াসার পাল্লায় পড়ে একদম নাজেহাল হয়ে গেছিলো! বহুবার তিয়াসাকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেই নিজের ঘাড়ে দোষ নিয়ে নিয়েছে!

তিয়াসা বরাবরের ডানপিটে, হাসিখুশি, প্রাণোচ্ছ্বল এক মেয়ে। রবিঠাকুরকে দেখে ওর মনে হয়েছে ভালোবাসা বারবার ফিরে ফিরে আসে, আর তা বিভিন্ন মানুষের সাথেই হতে পারে, সে একজনকে সারাজীবন ভালোবাসায় একদমই বিশ্বাসী নয়, বরং লিভিং অনেক ভালো, দায়িত্ব কম অথচ ভালোবাসা অঢেল, এই তত্ত্বেই বিশ্বাসী ছিলো তিয়াসা! ওদিকে ছোটোবেলা থেকে শাহরুখের সিনেমা দেখে বড়ো হওয়া রবি ঠাকুরের ভক্ত আদ্য পান্ত বাঙালী মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে হল স্নেহা ! ও বিশ্বাস করে ভালোবাসা একবারই হয়, আর সেই ভালোবাসায় ভর করেই নাকি সারাজীবন অতিবাহিত করে দেওয়া যায়! কিন্তু এতো বৈপরীত্যের মধ্যেও ওদের বন্ধুত্ব ছিলো অটুট! 

একবার স্নেহার খুব জ্বর হয়েছিলো, আর ওর বাবা মা কোনো কারণে বাড়িতে ছিলেন না, তিয়াসা ওর বাড়িতে রেখে সারাদিনরাত এক করে স্নেহার যত্ন নিয়ে ওকে সারিয়ে তোলে, আবার একবার তিয়াসার হাতে খুব জোড়ে চোট লাগলে স্নেহা নিজের হাতে পরীক্ষার আগে ওর জন্য নোটস বানিয়ে পড়িয়ে দেয়! এমনি নিঃস্বার্থ বন্ধুত্ব ছিলো ওদের! ওদের বন্ধুত্ব দেখে ওদের বাড়ির লোকেরা ওদের নিয়ে হাসি ঠাট্টাও করতো! দুজনকেই যখন ওদের বাড়ির লোকেরা বলতো, “ বিয়ের পর দেখবি তোদের বরেরা তোদের বন্ধুত্ব দেখলে ছেড়ে পালাবে” ওরা হেসে বলতো ওরা নাকি কোনোদিন বিয়েই করবে না! ওরা নাকি দুজনে রবীন্দ্রনাথ কে নিয়ে সারা জীবন একসাথে এভাবে কাটিয়ে দেবে! 

এরকমই হাসি কান্নায় আর রবিতে মজে উঠেছিলো ওদের বন্ধুত্ব! একদিন ওদের এক কমন ফ্রেন্ড এর জন্মদিনের পার্টিতে ওদের নিমন্ত্রণ হয়! আর সেখানেই ওদের আলাপ হয় ওই মেয়েটির পিসতুতো দাদার সাথে! নাম সৌমিক সেন! সে গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজ থেকে সদ্য পাশ করা শিল্পী! বাড়িতে বাচ্চাদের আঁকা শেখানো ছাড়াও তার সাহিত্যে আলাদা টান! নাটক থিয়েটার এর দিকেও বেশ ন্যাক ছিলো তার!অল্প কিছু সময়ের পরিচয়েই লম্বা রোগা ফর্সা চেহারার সৌমিক দুই বেস্ট ফ্রেন্ডের কাছে বেশ আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে! তিয়াসা তার স্বভাব সিদ্ধ ভঙ্গিমাতেই এক দিনের আলাপে সৌমিকের প্রেমে পড়ে যায়! সৌমিক ও দুজনের সাথে আলাপ করে বেশ খুশি হয়, তারপর দুজনের ফোন নাম্বার আদান প্রদান এবং শেষে তিয়াসার সাথে ডেটিং! 

এর আগে তিয়াসা এরকম বহু ছেলের প্রেমে পড়েছে এবং তারপর মাস খানেকের ডেটিং চ্যাটিং এর পর ব্রেক আপ! এই ছিল তিয়াসার বরাবরের রুটিন! মাঝে মাঝে স্নেহার এসব খারাপ লাগলেও বন্ধুত্বের কথা ভেবে কিছু বলে উঠতে পারেনি! অনেক বার বুঝিয়েও যখন তিয়াসা বোঝেনি তখন হাল ছেড়ে দিয়েছে, অবশেষে নিজের মন কে বুঝিয়েছে তিয়াসা হয়তো একদিন ঠিক বুঝবে ভালোবাসার আসল মানে টা, যেদিন ওর জীবনে এমন কোনো ছেলে আসবে যে ওকে বোঝাবে ভালোবাসার ভাষা, ভালোবাসার মানে, বিশ্বাস করাবে সত্যিই ভালোবাসা হয়! আর সেটা একবারই হয়! আর যেদিন সেটা হবে সেদিন স্নেহার থেকে খুশি বোধহয় আর কেউ হবে না! আর সেদিনের অপেক্ষাতেই ছিলো স্নেহা! 

আরও পড়ুন – এই লেখিকার লেখা আরও একটি গল্প “বিনোদিনী”

সৌমিক এর সাথে প্রথম আলাপেই স্নেহা সৌমিকের সাহিত্য প্রেম আর অমায়িক ভদ্র ব্যবহারে আকৃষ্ট হয়! ছেলেটা সত্যিই অন্যরকম, মুখে মিষ্টি হাসি আর সদা প্রাণোচ্ছল চোখের ভাষা যেন স্নেহাকে ক্রমেই ওর প্রতি দুর্বল করে তুলছিলো! তিয়াসার সাথে ডেটিং বাদে বেশির ভাগ সময় ওরা তিনজনেই কাটাতো, নানা রকম বিষয়ে সৌমিকের জ্ঞান ছিলো, দেশ রাজনীতি নিয়ে অনেক কিছুই বোঝাতো ওদের, আর যতই সৌমিক ওদের সাথে মিশে যেতে থাকে একটু একটু করে স্নেহাও সৌমিকের প্রেমে পড়তে থাকে, কিন্তু যেহেতু তিয়াসা অন্য সকলের মতো সৌমিকের সাথে ডেটিং করতে থাকে, স্নেহা নিজের মনের কথা বলে উঠতে পারেনা, আর স্নেহা খেয়াল করে সৌমিক তিয়াসার ব্যাপারে যথেষ্ট সিরিয়াস আর পোসেসিভ, তার থেকেও বড়ো কথা ছিলো সৌমিকের সাথে মেশার পর থেকে তিয়াসার মধ্যে স্নেহা এক আশ্চর্য পরিবর্তন খেয়াল করে, সৌমিকের সাথে আলাপের মাস খানেক পর একদিন স্নেহা তিয়াসা কে ওদের সিক্রেট মিটিং প্লেসে ডেকে আনে, 
স্নেহা- আমাকে একটা সত্যি কথা বলবি? 
তিয়াসা-তোকে আমি কোনদিন কি  মিথ্যে বলেছি? 
স্নেহা- না, বলিস নি, তবে আমাকে বল সৌমিক কে নিয়ে তুই কি ভাবছিস? 
তিয়াসা- কি ভাবছি? মানে?
 স্নেহা- দেখ, সত্যি বলছি ছেলেটা তোকে বোধহয় সত্যিই  ভালোবাসে! 
তিয়াসা- হুম! 
স্নেহা- মানে? জাস্ট হুম? আরে ভালোবাসা মানে ভালোবাসা, তোর মতো টাইম পাস না! 
একটু চেঁচিয়েই কথাটা বলে ফেলে স্নেহা, বুঝতে পারে এতোটা রিয়াক্ট না করাই ঠিক, পাছে তিয়াসা স্নেহার মনের কথা বুঝে ফেলে তাই নিজেকে সংযত করে নিয়ে বলে- 
দেখ তিয়াসা, তোকে আমি এর আগেও অনেক বার বুঝিয়েছি, ভালোবাসা ছেলে খেলা করার বিষয় নয়, এবার তো নিজের লাইফ নিয়ে একটু সিরিয়াস হ! 
স্নেহা-হুম! 
তিয়াসা এবার সত্যিই বিরক্ত হয়ে বলে, ঠিক আছে বুঝেছি, আমার কোনো কথাই তুই শুনবিনা, গ্রেট, আমি চলে যাচ্ছি, যা ভালো বুঝিস কর! 
স্নেহা  পিছন ঘুরে যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ালে তিয়াসা উঠে সজোড়ে স্নেহাকে জড়িয়ে ধরে, আর চিৎকার করে বলে “ স্নেহা, স্নেহা, স্নেহা, মাই সুইটহার্ট, ইউ আর অবসলিউটলি রাইট মাই ডিয়ার, ভালোবাসা, ইয়েস, দেয়ার ইস লাভ, এন্ড আই বিলিভ ইন লাভ, এন্ড আই থিংক আই আয়্যাম ইন লাভ উইথ সৌমিক” এক নিঃশ্বাসে কথা গুলো বলে থামে তিয়াসা! স্নেহা পিছন ফিরে নিজের চোখের জল সামলে নিয়ে সামনে ফিরে নিজের বন্ধুকে আলিঙ্গন করে বলে, সত্যি বলছিস? তুই সিরিয়াস? 
-হ্যাঁ রে, মনে হয় এই জীবনে প্রথম বার আমার মনে হচ্ছে আমি সিরিয়াস, আর এই প্রথম বারের জন্য আমার মনে হচ্ছে তুইই ঠিক বলতিস এতদিন, ভালোবাসা বোধহয় সত্যিই একিস্ট করে রে! 
-তা, আমার পাগলী বন্ধুটাকে কি করে সৌমিক এতটা পাল্টালো শুনি? 
-প্রথম যেদিন ওর সাথে ডেটিং এ যাই আমি জানিনা কেনো খুব ড্রিঙ্ক করে ফেলেছিলাম, আর তুই তো জানিস, ড্রিঙ্ক করলে আমার মাথার ঠিক থাকেনা, আমাকে ঐ সময় একমাত্র তুইই সামলাতে পারিস, তুই বল আমার মতো একজন মেয়ে ড্রিঙ্ক করে, কোনো ছেলেকে কিস করতে যাবে আর সেই ছেলে রিফিউস করবে? এর আগে এমন ঘটনা হয়েছে কোনোদিন? সেদিন আমাকে রিফিউস করেছিল সৌমিক, শুধু তাই না আমাকে নিজে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছিলো, তারপর সারারাত আমার মাথার পাশে বসেছিলো, তুই তো জানিস আমার বাবা মা র ডিভোর্সের পর তুই ছাড়া আমাকে এতো ভালো কেউ বাসেনি, আর ওর আগে যত ছেলের সাথে আমি ডেটিং করেছি সবাই আমার শরীর কে চাইতো, আমাকে না, এই প্রথম সৌমিক আমাকে, আমার মন কে চেয়েছে স্নেহা! সত্যিই ও আমাকে ভালোবাসে! এরপর আমরা যতবারই ডেটিং করেছি সৌমিক কোনোদিন নিজের থেকে আমাকে টাচ করেনি, আমি চাইলেও করেনি, কি বলে জানিস? বলে যেদিন তুই আমাকে তোর মন দিতে পারবি সেদিন বলতে হবেনা, আমি নিজেই তোর শরীরকে পেয়ে যাবো, কিন্তু তার আগে না! এর আগে এভাবে আমাকে কেউ বলেনি, ও আমাকে আমার বাবার কথা মনে করিয়ে দেয় জানিস? আমার মা যেভাবে আমার বাবাকে ঠকিয়ে অন্য একজনের সাথে চলে গেছিলো, আমি চাইনা আমিও ওকে ঠকিয়ে অন্য কারও সাথে চলে যাবো! আর সেই কষ্ট টা ওকে আমি দিতে পারবো না রে!আমার বাবা আমার মা র চলে যাওয়া মেনে নিতে না পারায় আজ আসালাইমে ভর্তি! এই সেম ভুল আমি আমার জীবনের সাথে করতে পারবো না রে স্নেহা! আমি সত্যিই ওকে ভালোবাসতে চাই, হয়তো এতো তাড়াতাড়ি আমি বদলে যাবো না, যেতে পারবো না, তবে তুই আমাকে সাহায্য করলে আর সৌমিকের ভালোবাসায় আমি নিজেকে পাল্টে ফেলবো! আমি সৌমিক কে কষ্ট দিতে পারবো না স্নেহা! প্লিজ হেল্প মি আউট! 

(ক্রমশঃ)


0 comments

Saurav Chakraborty

Saurav Chakraborty

Shared publicly - 21st Sep, 20 10:02 am

Nice story

Aniruddha banik

Aniruddha banik

Shared publicly - 31st Aug, 20 10:07 am

khb bhalo post.. Darun

Redirect to Address page

Updating Subscription details

Redirecting...Please Wait