অণুগল্প : চাঁদনীর মুক্তি

অণুগল্প : চাঁদনীর মুক্তি

কড় কড় বাজের শব্দে ঘুমটা ভেঙে গেল চাঁদনীর। জানলাটা ঝড়ের ধাক্কায় কখন খুলে গেছে! গোলাপি পর্দা গুলো হওয়ায় উথাল পাতাল উড়ছে। বিছানা থেকে জানলা বন্ধ করার জন্য নামতে গিয়ে চমকে গেল। পায়ের নীচে মেঝে এমন দুলছে কেন! যেন বাড়িটা মাটিতে নয় নদীতে ভাসছে! আবার একটা বাজ পড়লো। বিদ্যুতের ঝলকে ঘরটা একবার আলোয় ঝলমল করে উঠেই অন্ধকার হয়ে গেল। ঘরের সাদা দেওয়ালে উত্তাল সমুদ্রের ঢেউয়ের ছায়া আর গর্জন। টলতে টলতে জানলার দিকে এগিয়ে গেল চাঁদনী!

বাইরে উত্তাল সমুদ্র বৃষ্টি দেখে ধীরে ধীরে ওর মনে পড়লো, ও বাড়িতে নয়, জাহাজে! একে একে ডেকের উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ময়লার মত নিষ্প্রাণ দেহ গুলোকে সমুদ্র ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে দিচ্ছে। কিছু ঘন্টা আগেই এই প্রাইভেট জাহাজের মালিক, আরবের বিজনেস টাইফুন আব্দুল হাসান, ওর স্বামী নিরাজ আগরওয়াল ও তার সমস্ত কর্মীদের নাচতে নাচতে মদের সাথে বিষ মিশিয়ে খুন করেছিল ও। পর্দার আড়াল থেকে যখন ওকে বিক্রির কথা চলছিল, নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারেনি চাঁদনী! মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার সময় নিরাজের বিকৃত মুখটা দেখে বড্ড তৃপ্তি পেয়েছিল চাঁদনী। প্রতারকের এই পরিণতি হওয়া উচিৎ! নীচের ডেকটা ফুটো হয়ে জাহাজে হুড়মুড় করে জল ঢুকছে। আর কিছুক্ষণের মধ্যে জাহাজটাকে নিজের বুকে স্থান দেবে সমুদ্র।

ADVERTISEMENT
Tuhu Momo Video Teaser

জানলা বন্ধ করে বিছানায় ফিরে এলো চাঁদনী। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। নাহ! ওর আর নিজের প্রাণ নিয়ে চিন্তা নেই। এই সমুদ্র চাইলে গিলে নিক ওকেও। প্রাণ থাকতে ও এই শয়তান গুলোকে তো ইজ্জ্বত দেয়নি! ওর একটা প্রাণের বদলে ওর মত আরও কিছু চন্দ্রানী আজ বেঁচে গেল! পাশে রাখা পটাশিয়াম সায়ানাইটের বোতলটা দেখলো। মৃত্যু যখন অবধারিত, তখন জলে ডুবে দম বন্ধ করে কেন! একটা সায়ানাইটের বড়ি বের করে মুখে দিয়ে ছাঁটে ভেজা মাখনের মত নরম, চাঁদের মতোই সুন্দর শরীরটাকে এলিয়ে দিলো নরম নীল বিছানায়।

Redirect to Address page

Updating Subscription details

Redirecting...Please Wait