ভাবিনা হাসমুখভাই প্যাটেলের হাত ধরে টোকিও প্যারাঅলিম্পক্সে প্রথম পদক ভারতের

ভাবিনা হাসমুখভাই প্যাটেলের হাত ধরে টোকিও প্যারাঅলিম্পক্সে প্রথম পদক ভারতের

 স্পোর্টস ডেস্ক: টোকিও প্যারাঅলিম্পিক্সে ভারতের হয়ে পদকের খাতা খুললেন ভাবিনা হাসমুখভাই প্যাটেল। চিনের ঝৌ ইং-এর কাছে ক্লাস - ৪ বিভাগে টেবিল টেনিসের  ফাইনালে স্ট্রেট গেমে পরাজিত হয়ে রূপো জিতলেন গুজরাতের এই প্যাডলার। সেই সঙ্গে তিনি প্রথম ভারতীয় প্যাডলার হিসেবে প্যারাঅলিম্পিক্সে পদক লাভ করলেন। যদিও ফাইনালে পরাজয়ের ফলে সোনা জয় অধরাই থেকে গেল। তবে ভাবিনাবেন প্যাটেলের পদক জয়ের পথ মসৃন ছিলনা। প্রতিযোগিতার শুরুতেই এই ঝৌ ইং-এর কাছে হারতে হয়েছিল ভাবিনাবেন-কে। তারপর একের পর এক বাধা অতিক্রম করে তিনি প্যারাঅলিম্পিক্সের মঞ্চে ইতিহাস রচনা করেন। কোয়ার্টার ফাইনাল বিশ্বের দুই নম্বর এবং রিও-র চ্যাম্পিয়ন বোরিস্লাভা রাঙ্কোভিচ-কে হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠেন তিনি। এরপর সেমিফাইনালে বিশ্বের তিন নম্বর প্যাডলার ঝাঙ মিয়াও-কে হারিয়ে ফাইনালে ওঠেন ভাবিনা।নক আউট পর্বে একের পর এক ম্যাচ জিতে প্রবল আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ফাইনাল ম্যাচে নেমেছিলেন ভাবিনা। তবে ঝৌ-এর ব্যাকহ্যান্ড সামলাতে ব্যর্থ হয়ে স্ট্রেট গেমে হারতে বাধ্য হন। ফাইনালে খেলার ফল ছিল ৭-১১, ৫-১১ ও ৬-১১।

ADVERTISEMENT
Tuhu Momo Video Teaser

টোকিও অলিম্পিকে পদকজয়ী প্রত্যেক ভারতীয় অ্যাথলিটকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । প্যারালিম্পিকেও তার ব্যতিক্রম হল না। মোদির শহরের মেয়ের হাত ধরেই চলতি গেমসের প্রথম পদকটি এসেছে ভারতের ঘরে। 

মাত্র এক বছর বয়সেই পোলিয়োয় আক্রান্ত হয়েছিলেন ভবিনা । ধীরে ধীরে শরীরের নিচের অংশ অবশ হতে থাকে। সে সময় প্রয়োজনীয় চিকিত্‍সার সামর্থ্য ছিল না মধ্যবিত্ত পরিবারটির। তবে মেয়েকে সুস্থ করে তোলার যথাসাধ্য প্রয়াশ করেছিলেন ভাবিনার বাবা। মেয়েকে বিশাখাপত্তনমে চিকিত্‍সা করাতে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু কাজে লাগেনি অস্ত্রোপচার। কারণ যে রিহ্যাব করতে দেওয়া হয়েছিল, তা ঠিক মতো অনুসরণ করেননি ভবিনা। তাই চিরকালীন সঙ্গীতে পরিণত হয়েছে হুইলচেয়ার। তবে প্রতিবন্ধকতাকে কখনওই বাধা হয়ে দাঁড়াতে দেননি ভবিনা। ফিট থাকতেই প্রথম টেবিল টেনিস শুরু করেছিলেন তিনি। বাকিটা ইতিহাস। থাইল্যান্ড ওপেন প্যারা টেবিল টেনিসে রুপো থেকে প্যারা টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা-সহ একগুচ্ছ পদক ঝুলিতে ভরেছেন গুজরাটের অ্যাথলিট। এবার অলিম্পিকেও গর্বিত করলেন দেশকে। ফোনে ভবিনার প্রশংসা করে মোদি বলেন, 'তুমি ইতিহাস রচনা করেছ। আগামি দিনের জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা।'

সাধারণ স্কুলে পড়াশোনা শুরু করলেও, ২০০৪ সালে তাঁর বাবা আমদাবাদের ব্লাইন্ড পিপল‌্স অ্যাসোসিয়েশনে ভর্তি করিয়ে দেন। কম্পিউটাকর নিয়ে পড়াশোনা করার ইচ্ছা ছিল ভাবিনার। কিন্তু ব্লাইন্ড পিপল‌্স অ্যাসোসিয়েশনেই তার জীবনের মোড় ঘুড়িয়ে দেয়। সেখানে শারীরিক ফিটনেসের জন্য ভাবিনাকে টেবিল টেনিস খেলার পরামর্শ দিয়েছিলেন লালা যোশী। টিটি ব্যাট হাতে নেওয়ার পর থেকেই জীবনে বদলাতে শুরু করে ভাবিনার। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই টেবিল টেনিস খেলা রপ্ত করে নেন ভাবিনা। ভালোও বেসে ফেলেন টিটিকে। কেরিয়ার হিসেব স্পোর্টসকেই বেছে নেন তিনি। কঠোর পরিশ্রমও শুরু করে দেন ভাবিনা প্যাটেল। প্রথমে জীবনে নানা বঞ্চনার শিকারও হতে হয় তাকে।২০০৭-এ বেঙ্গালুরুতে প্যারা টেবিল টেনিসে জাতীয় খেতাব জেতেন। ২০০৯-এ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অভিষেক হয় তাঁর। তবে সাফল্য পেতে আরও দু'বছর লেগেছিল। ২০১১-য় তাইল্যান্ড ওপেন প্যারা টেবিল টেনিসে রুপো জেতেন তিনি

Redirect to Address page

Updating Subscription details

Redirecting...Please Wait