দোল পূর্ণিমা বা গৌর পূর্ণিমার মাহাত্ম্য বর্ণনা করলেন মহারাজ রাধারমন দাস

দোল পূর্ণিমা বা গৌর পূর্ণিমার মাহাত্ম্য বর্ণনা করলেন মহারাজ রাধারমন দাস

 দোল আমাদের ঋতুচক্রের শেষ উৎসব। এই দিনটির জন্য আমরা সবাই অপেক্ষা করে থাকি। এই সময় প্রকৃতিও তার নিজের রূপকে ফুটিয়ে তোলে। দোল পূর্ণিমা বা দোল যাত্রা, সনাতন হিন্দুধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও বর্ণিল উত্‍সব। বাংলা ও ওড়িষা ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন স্থানে দোল উত্‍সব মহাসমারোহে পালিত হয়। দেশের অন্যান্য স্থানে, বিশেষ করে উত্তরভারতে দোল যাত্রা হোলি নামে পরিচিত। তবে দোল উত্‍সবের অপর নাম হল বসন্তোত্‍সব। যা শান্তিনিকেতনে এর সুনাম বিশ্ববিখ্যাত। ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে প্রতিবছর দোলযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। ছোট থেকে শুরু করে বড়, সবাই রঙের উৎসবে মেতে ওঠে।

বিদেশিদের মধ্যেও এর প্রচলন দেখা যায়। দোল পূর্ণিমা দিন হোলির রঙে সবাই নিজেদের রাঙ্গিয়ে তোলে, সমস্ত বিভেদ ভুলে এক হয়ে যায়। দোল বা হোলির অর্থ এক হলেও দুটি ভিন্ন অনুষ্ঠান।

বৈষ্ণবদের মতে, দোল পূর্ণিমার দিন শ্রীকৃষ্ণ আবির নিয়ে শ্রীরাধা ও অন্যান্য গোপীদের সঙ্গে রঙ খেলায় মত্ত ছিলেন। সেখান থেকেই দোলযাত্রার শুরু। ১৪৮৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি, দোল পূর্ণিমা তিথিতে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মগ্রহণকে কেন্দ্র করেও এই মহোত্‍সব পালন করা হয়। এই তিথিকে গৌর পূর্ণিমাও বলা হয়।

গৌর-পূর্ণিমা বৈষ্ণবদের একটি উৎসব, যা প্রধানত চৈতন্যদেবের (১৪৮৬ -১৫৩৪) জন্মদিন হিসাবে পালিত হয়। এটি সাধারণত মার্চ-এপ্রিল মাসের ফাল্গুনী পূর্ণিমার দিন হয়ে থাকে। গৌর-পূর্ণিমার অর্থ 'গৌর বা সোনালী বর্ণের উজ্জ্বল চাঁদ', যা চৈতন্যদেবের প্রতীক। তাঁর অনুগামীরা উপবাস থেকে চন্দ্রদয়ের মাধ্যমে এই উৎসব পালন করে থাকে।

নবদ্বীপে গৌড়ীয় বৈষ্ণবরা এই উৎসব পালন করেন।

ADVERTISEMENT

কলকাতার ইসকনেও পালিত হচ্ছে এই মহা উৎসব। শ্রী রাধারমন দাস (ভাইস প্রেসিডেন্ট, ইসকন) স্বদেশ টাইমসকে জানান, আজ অর্থাৎ ১৭ মার্চ থেকে আগামীকাল পর্যন্ত এই উৎসব পালন করা হবে। এই দুই দিন রয়েছে নানান অনুষ্ঠান। আজ বিকেল থেকে শুরু হয়েছে এই অনুষ্ঠানের শুভারম্ভ। আজকের অনুষ্ঠানে আছে নগর সংকীর্তন, রয়েছে সন্ধ্যারতি এছাড়াও রয়েছে অদিবাস। এবং আগামীকাল অর্থাৎ দোল পূর্ণিমার দিন রাত ৮ঃ৩০ টা থেকে  রয়েছে, শ্রী নগর দর্শন, গৌরকথা, সন্ধ্যায় রয়েছে কীর্তন , মহাভিষেক, প্রাইজ বিতরন,মহাপ্রসাদ দান ইত্যাদি বিষয় গুলি।

এখনও অনেকের মুখে শোনা যায়, বসন্ত পূর্ণিমার দিনে নাকি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, কেশি নামে একজন অসুরকে বধ করেন। কেশি একজন অত্যাচারী এবং নিষ্ঠুর অসুর ছিলেন। এর জন্য এই অত্যাচারী অসুর দমন হওয়ার জন্য এবং অন্যায় শক্তি ধ্বংস হওয়ার জন্য আনন্দ উৎসবে এই দিনটি উদযাপিত হয়ে থাকে।

Redirect to Address page

Updating Subscription details

Redirecting...Please Wait