সাদা জিরাফ। একটি বিরলতম বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতি। সারা পৃথিবীতে এরা এখন সংখ্যায় কত জানেন? তবে 'এরা' না বলে 'এটি' বলাই শ্রেয়। কি হল? চমকে উঠলেন? হ্যাঁ ঠিকই পড়ছেন আপনি। সারা পৃথিবীতে এই প্রজাতির জীবের সংখ্যা এখন মাত্র একটি। কারণ? কারণ হল এই বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রজাতি। মানুষ। মানুষের লোভের কারণে আজ একটি প্রজাতি পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হওয়ার পথে।
সাদা জিরাফ পৃথিবীতে খুবই বিরল। ২০১৬ সালের মার্চ মাসে পূর্ব কেনিয়ায় প্রথম দেখা মেলে এই জিরাফের।
এই প্রজাতির বিশেষত্ব : সাদা জিরাফের অনন্যতা তার চামড়ার রঙের কারণে। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় বলতে গেলে এর চামড়ার কোনো রঙ নেই। কারণ হলো লিউসিজম। বিরল জিনগত বৈশিষ্ট লিউসিজমের কারণে এই প্রজাতির জিরাফের ত্বক স্বাভাবিক ত্বকের রঙের মতো রঞ্জিত হয় না। তাই একে সাদা উজ্জ্বল বর্ণের দেখতে লাগে। আর এই উজ্জ্বল সাদা চামড়ার কারণেই চোরাশিকারীদের লোভের শিকার হয়ে সারা পৃথিবীতে একটি মাত্র প্রাণী জীবিত আজ।
ADVERTISEMENT
এই বছরের শুরুতেও সাদা জিরাফের সংখ্যা ছিলো তিন। কিন্তু গত মার্চ মাসে দুটি জিরাফের মৃতদেহ উদ্ধার হয় কেনিয়ার জঙ্গলে। তবে মৃতদেহ না বলে দেহাংশ বলাই ভালো। মানুষরূপী কিছু পিশাচ (চোরাশিকারী) দুটি জিরাফকে মেরে তাদের চামড়া ছাড়িয়ে শুধুই হাড়গোড় আর রক্তমাখা মাংস ফেলে রেখে গিয়েছিল। সেই সাদা জিরাফ দুটির মধ্যে একটি ছিলো মেয়ে জিরাফ আর একটি তার বাচ্চা। একটি শিশুকে হত্যা করতেও "মানুষ"(!) গুলির হাত কাঁপেনি।
বিরল এই প্রজাতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য কেনিয়া ওয়াইল্ডলাইফ সংস্থা ঐ পুরুষ জিরাফটির একটি শিঙে সম্প্রতি জি.পি.এস ট্র্যাকার ডিভাইস লাগিয়েছে। লক্ষ্য এই ট্র্যাকারের মাধ্যমে জিরাফটির অবস্থান ও নিরাপত্তাগত পরিস্থিতি নজরদারির মধ্যে আনা।
কিন্তু এভাবে কত দিন? প্রযুক্তির সাহায্যে এই একটি মাত্র জীবিত সাদা জিরাফটিকে না হয় বাঁচিয়ে রাখা গেল। 'জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কথা কবে'! তার মৃত্যুর পর এই প্রজাতিটির অস্তিত্ব এর ছাপ শুধুই ইতিহাস হয়ে থেকে যাবে। বংশবিস্তারের কোনো সুযোগই যে নেই তার কাছে। তার মৃত্যুর সাথে সাথেই পৃথিবী থেকে মুছে যাবে আরও একটি প্রজাতির অস্তিত্ব। এ কি মেনে নেওয়া যায়? নিজেরা "দায়িত্ব"(!) নিয়ে আরও একটি প্রজাতিকে আমরা ঠেলে দিচ্ছি 'এক্সটিঙ্কট' উপাধি অর্জন করার দিকে।
বাহঃ!! পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ প্রজাতি। তোমাকে "সেলাম"(!)।
0 comments