উত্তম-সুচিত্রা জুটির কাজ নিয়ে অভিনব চর্চা - স্বদেশ টাইমসের মুখোমুখি মৌমিতা রায়চৌধুরী

উত্তম-সুচিত্রা জুটির কাজ নিয়ে অভিনব চর্চা - স্বদেশ টাইমসের মুখোমুখি মৌমিতা রায়চৌধুরী

আজও বাঙালি মেয়েদের স্বপ্নের রাজপুত্র এক এবং অদ্বিতীয় উত্তম কুমার। মহানায়ক তো বটেই কিন্তু তার থেকেও বেশি তাঁকে ঘিরে নস্টালজিয়া।

সেই রকমই একজন মানুষকে আমরা পেয়েছি- মৌমিতা রায় চৌধুরী, যিনি নিজেও ছোটবেলা থেকে মহানায়কের নানান ছবি দেখে বড় হয়েছেন এবং মহানায়কের সেরা জুটি "উত্তম-সুচিত্রাতে" তিনি এতটাই জড়িয়ে পড়েছেন যে ফেসবুকে উত্তম কুমার এবং সুচিত্রা সেনের নামে একটা গ্রুপও খুলেছেন। এবং সেখানে প্রচুর মানুষ রয়েছে, আর সঙ্গে রয়েছে মহানায়কের জন্য তাদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা।
 

সেই সম্পর্কে স্বদেশ টাইমসের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় মৌমিতা রায় চৌধুরী।  

 

স্বদেশ টাইমস : মহানায়ক কেন প্রথম দিকের ছবি গুলিতে পরিচিতি পাননি?

ADVERTISEMENT

মৌমিতা : মহানায়ক নিজে স্বীকার করে গেছেন প্রথমদিককার ছবিগুলোতে তিনি খুব একটা সফল হতে পারেননি, তার কারণ সঠিক, মানানসই জুটির অভাব। মহানায়ক অসামান্য অভিনেতা, সময়ের থেকে অনেক এগিয়ে ছিল তাঁর অভিনয়, অসম্ভব নিষ্ঠাবান ছিলেন, অধ‍্যবসায় ছিল চিন্তাতীত অথচ এই মহানায়কের প্রথমদিককার ছবিগুলো সাফল‍্যের মুখ দেখছিল না, এমনকি ইন্ডাস্ট্রিতে জুটেছিল 'ফ্লপ মাস্টার জেনারেল'-এর তকমা! পরবর্তীতে তিনি নিজেই জানিয়েছেন এর কারণ। প্রথমদিককার ছবিতে ওনার নায়িকারা ছিলেন বেশিরভাগই বয়সে বড়, তাই পর্দায় সেই জুটির রসায়ন জমত না। দর্শকরা স্বাভাবিকভাবেই সেটা পছন্দ করতেন না। ছবি ফ্লপ হতো।

 

 

স্বদেশ টাইমস : উত্তম কুমারের 'মহানায়ক' হয়ে ওঠা কি ভাবে শুরু হল?
 

মৌমিতা : পরে যখন তিনি সুচিত্রা সেনকে নায়িকা হিসাবে পান তখন তিনি বোঝেন যে তাঁর নায়িকা এবার এসে গেছে। তখন থেকে দুজনের কাউকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি।  মহানায়কের মহানায়ক হয়ে ওঠার শুরুটা এভাবেই হয়েছিল এবং উত্তম-সুচিত্রা জুটির আসল জয়যাত্রা শুরু হয় 'অগ্নিপরীক্ষা' ছবি সুপারহিট হবার পর থেকেই, যেটা তিনি তাঁর আত্মজীবনী 'আমার আমি' বইতেও উল্লেখ করে গেছেন।
 

 

স্বদেশ টাইমস : উত্তম কুমারের মৃত্যুর আগে মাধবী মুখোপাধ্যায়, সাবিত্রী আরও অনেকেই রয়েছেন যাঁরা উত্তম কুমারের সঙ্গে অভিনয় করেছেন, কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি সুচিত্রাকে বেছে নিলেন কেন?  

 

মৌমিতা : মহানায়কের সকল সহনায়িকাদের কথা মাথায় রেখেই বলছি, সবাই যার যার জায়গায় অসাধারণ নিঃসন্দেহে কিন্তু উত্তমকুমার-সুচিত্রা সেন জুটির কেমিস্ট্রি সবার উপরে। সোনার জুটি, যার আবেদন এখনও এই ২০২২ এও অটুট। ফেসবুকে আমার গ্রুপ ‘UTTAMKUMAR,SUCHITRA SEN-THE GOLDEN PAIR’ তার  উজ্জ্বলতম নিদর্শন। এই জুটির নামাঙ্কিত গ্রুপ এর বর্তমান সদস্য সংখ্যা চুয়াত্তর হাজারেরও বেশি এবং প্রতিদিন এই স্বর্ণজুটির অমোঘ আকর্ষণে, তাঁদের সম্বন্ধে নানান তথ‍্যাদি জানতে আগ্রহী সদস‍্যরা যোগ দিচ্ছেন এই গ্রুপে।

 

 

স্বদেশ টাইমস : "UTTAMKUMAR,SUCHITRA SEN-THE GOLDEN PAIR"( উত্তম কুমার সুচিত্রা সেন দ্য গোল্ডেন পেয়ার) - এই গ্রুপটি করার কারণ?

 

মৌমিতা : উত্তম-সুচিত্রার অনবদ্য সৃজনশীল কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা ও পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তাঁদের অসামান্য সৃষ্টি পৌঁছে দেওয়াই এই গ্রুপের প্রধান উদ্দেশ্য।

২০১৯ সালে ১৪ জানুয়ারি এই গ্রুপটি খোলা হয় এবং কিছুদিনের মধ্যেই ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই গ্রুপ। কারণ উত্তম-সুচিত্রা সম্বন্ধীয় নানান অজানা তথ‍্যাদি আমরা দিয়ে থাকি, এনাদের অভিনীত ছবিগুলো নিয়ে সুন্দর ভাবে চর্চা হয়ে থাকে এই গ্রুপে। বর্তমানে আমাদের এই গ্রুপটি সংখ‍্যাগরিষ্ঠ গ্রুপ ফেসবুকের, উত্তম-সুচিত্রা সম্বন্ধীয়।

 

 

স্বদেশ টাইমস : আপনাদের ভাবনা কি শুধুই উত্তম-সুচিত্রা?

 

মৌমিতা : না। ভাবনা শুধুমাত্র উত্তম কুমার ও সুচিত্রা কে নিয়েই নয়, "মহানায়ক উত্তমকুমার ও স্বর্ণযুগের কান্ডারিরা" বলেও একটি ফেসবুক গ্রুপ আমি খুলেছি, সেখানে মহানায়কের সঙ্গে স্বর্ণযুগের সমস্ত শিল্পীদের নিয়ে চর্চা করা হয়। এই গ্রুপ মাত্র একবছরে প্রায় তিরিশ হাজার সদস্য সংখ‍্যায় ছুঁয়েছে ইতিমধ্যেই। শুধু নায়ক,নায়িকা নয় তখনকার সময়ের সমস্ত দিকপাল চরিত্রাভিনেতা,চরিত্রাভিনেত্রী, পরিচালক, সুরকার, গীতিকার, সঙ্গীত শিল্পীদের নিয়েও চর্চা হয়ে থাকে এই গ্রুপে।

 

 

স্বদেশ টাইমস : পাঁচ-এর দশক কি তারও আগের সময়টা সুচিত্রার জন্য কেমন ছিল আর আপনার কি মনে হয় না সুচিত্রা সেন একটু ইগোয়িস্টিক ছিলেন?

 

মৌমিতা : মহানায়িকা সুচিত্রা সেন সেই পাঁচের দশকে ছবির জগতে যখন প্রতিষ্ঠা পেতে শুরু করেন তখন থেকে সঠিক পারিশ্রমিক এবং নিজের আত্মসন্মান নিয়ে সচেতন ছিলেন। তখন ছিল পুরুষ শাসিত ইন্ডাস্ট্রি, নায়িকারা অনেক কম পারিশ্রমিক পেতেন সেই সময়। ওনার দেখানো পথেই বরং পরবর্তী প্রজন্মের নায়িকারা সুবিচার পান এবং ন‍্যায‍্য পারিশ্রমিক পান। স্বয়ং কাননদেবী ওনাকে মরাল সাপোর্ট দিয়েছিলেন। আর পারিবারিক সমস্যা ছিল, বিবাহিত জীবন ডিস্টার্বড ছিল, প্রায় একাই কন‍্যা সন্তানকে বড় করেছেন। এদিকে অসামান‍্যা সুন্দরী, অতবড় হিরোইন, কঠিন বর্ম চারিদিকে না ঘিরে রাখলে কখনও একজন নারী হিসেবে স্বমর্যাদায় এতখানি পথ একলা অতিক্রম করতে পারতেন না। যেটা ইগো মনে করছেন আপনারা বা সবাই, সেটা আসলে প্রখর আত্মসন্মান বোধ।

 

স্বদেশ টাইমস : আপনার বড় হয়ে ওঠাটা কি কোথাও গিয়ে এই ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত?

 

মৌমিতা : আমার বড় হয়ে  ওঠাটাও বলতে গেলে এই ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত। কারণ আমার বাবা চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে যুক্ত। তিনি আর কেউ নন বিখ্যাত ডিরেক্টর নারায়ন রায়, কলকাতা শহরের একজন নাম করা অর্গানাইজার, এবং 'ছন্দম'-এর চেয়ারম্যান। 

  

 

স্বদেশ টাইমস : উত্তম-সুচিত্রা জুটির কোন ছবি আপনার সবচেয়ে প্রিয় এবং কেন?

 

মৌমিতা : উত্তম-সুচিত্রা জুটির সব ছবিই ভালোলাগে কিন্তু সবথেকে প্রিয় দুটি ছবির নাম বলতে চাই- (১) সপ্তপদী এবং (২) নবরাগ। আর কারণ হল -'সপ্তপদী' ছবিতে দুজনের দুর্দান্ত অভিনয়, এত স্মার্ট, ঝকঝকে অভিনয়। দুজন যেন দুজনকেই ছাপিয়ে গিয়েছেন প্রতি মূহুর্তে এই ছবিতে। যেমন অসাধারণ মহানায়কের ‘কৃষ্ণেন্দু’ তেমনই অনবদ্য সুচিত্রা সেনের ‘রীনা ব্রাউন’। এ যেন সেই মান্না দের সেই গানের লাইনের মতন- "বলো কীভাবে তুলনা করি, কাকে ছেড়ে কাকে ধরি..!"

আর 'নবরাগ' ছবিটি উত্তম-সুচিত্রার পরিণত বয়সের ছবি (১৯৭২), বিজয় বসুর পরিচালনা। অসাধারণ লাগে আমার, খুব ম‍্যাচিউর অভিনয়, অসাধারণ এক্সপ্রেশন, দুজনকে ঐ সময়ে দেখতেও দারুণ ভালো লেগেছিল আমার। গল্পটাও খুব অন‍্যরকম। সবমিলিয়ে এই জুটির অসাধারণ আরেকটি ছবি হলো 'নবরাগ'।

 

 

স্বদেশ টাইমস : সুচিত্রা সেনের পরেই কোন নায়িকাকে উত্তম কুমারের সঙ্গে দেখতে আপনার ভালো লাগে?

 

মৌমিতা :  সুচিত্রা সেনের পরেই আমার প্রিয় জুটি হলো উত্তম-অঞ্জনা ভৌমিক জুটি। এই জুটির অন‍্যরকম একটা আকর্ষণ আছে। ভীষণ স্মার্ট, ঝকঝকে। 'চৌরঙ্গী', 'নায়িকা সংবাদ', 'কখনো মেঘ', 'শুকসারী' ইত‍্যাদি ছবিগুলো ভীষণ প্রিয় আমার এই জুটির।

 

 

স্বদেশ টাইমস : বিপক্ষে সুচিত্রা সেন ছাড়া উত্তম কুমারের কোন সিনেমা আপনার প্রিয়?

 

মৌমিতা :  অসংখ্য ছবি প্রিয়, কোনও একটা বলা বেশ কঠিন আমার পক্ষে! তবুও বলব উত্তমকুমার-তনুজা অভিনীত 'অ্যান্টনী ফিরিঙ্গি' ছবির কথা। হান্স অ্যান্টনী ওরফে অ্যান্টনী কবিয়াল যেন সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছিল এই ছবিতে। আজও এছবি আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতন দেখি। যেমন লুক তেমনই অভিনয়, এভাবে রক্তমাংসের চরিত্র হয়ে উঠতে মহানায়কের মতন আর কোনও অভিনেতাকে আমি দেখিনি। আর অসামান্য তাঁর লিপসিং, মান্না দের কালজয়ী গান রয়েছে এছবিতে। কী অসামান্য, অনায়াস গানের দৃশ‍্যে মহানায়কের নিখুঁত অভিনয়, ভাবা যায় না! তেমনই এছবিতে শেষ দৃশ্যে তাঁর অনবদ্য অভিনয়, ওই আকুতি, ওই হাহাকার, যন্ত্রণা কী সাবলীলভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন উনি, চোখের জল বাঁধ মানবে না দেখলে। এমন নায়ক-অভিনেতা শতাব্দীতে একজনই জন্ম নেয়। শতকোটি প্রণাম জানাই মহানায়ককে।
 

 

স্বদেশ টাইমস : ভিলেনের চরিত্রে উত্তম কুমারকে কিভাবে দেখবেন?

 

মৌমিতা : এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে বলি, এখনও পর্যন্ত করা সকল প্রশ্নের মধ্যে সবথেকে পছন্দের প্রশ্ন রাখলেন আপনারা আমার কাছে।

মহানায়কের রোমান্টিক অভিনয় যতখানি আমরা চর্চা করে থাকি নেগেটিভ শেডের অর্থাৎ ভিলেনের চরিত্র নিয়ে তুলনায় অনেক কম কথা বলা হয়েছে বলে আমার মনেহয়।

মহানায়ক ছিলেন ভার্সেটাইল অভিনেতা। রোমান্টিক চরিত্রে শুধু নয় নেগেটিভ চরিত্রেও দুর্দান্ত সব অভিনয় করে গেছেন। যেমন-'শেষ অঙ্ক' ছবিতে ঠান্ডা মাথার খুনি, সে আবার প্রেমিক, দ্বন্দ্ব, হতাশা, অন্তর্দহন এর মিশেলে সৃষ্ট তাঁর 'শেষ অঙ্ক' ছবির চরিত্র। ভাবা যায় না। গালে হাত দিয়ে ভাবতে হয় এমন কোনও চরিত্র আর কোথায়, কাকে এইভাবে ফুটিয়ে তুলতে দেখেছি? নাহ এই বিস্ময়বোধের রেশ আমার মনে অন্তত আর রেখে যাননি কোনও অভিনেতা। 'বাঘবন্দী খেলা', 'স্ত্রী', 'অপরিচিত' প্রতিটা নেগেটিভ চরিত্র-এ তিনি সমান পারদর্শী। আফশোস হয় এমন অসাধারণ অভিনেতা কেন এত অকালে চলে গেলেন। দিয়ে যাবার ছিল তাঁর আরো কত মণিমুক্তা।

 

 

স্বদেশ টাইমস : মৌমিতা রায় চৌধুরীর উত্তম-সুচিত্রা জুটির প্রতি ভালো লাগার কারণ?

 

মৌমিতা : এই জুটি ভালো লাগার অনেক কারণ আছে,সবথেকে প্রধান কারণ এই জুটির অসামান্য রসায়ন, দুজনের উপস্থিতি যেন এক ম‍্যাজিক ক্রিয়েট করত। এত সুন্দর মানানসই, শক্তিশালী জুটি বাংলা চলচ্চিত্রে এর আগেও ছিল না, এখনও নেই, পরবর্তীতেও হবে বলে মনে হয় না।

মনে হত না উত্তম-সুচিত্রা অভিনয় করছেন, মনে হত তাঁরা সত‍্যিই প্রেমিক-প্রেমিকা বা স্বামী-স্ত্রী। এই যে স্বতঃস্ফূর্ত, স্বাভাবিক, সুন্দর অভিনয় দুজনেরই সেটাই অসামান্য হয়ে ধরা দিয়েছিল আমার চোখে এবং আমার মতন আরো লক্ষ দর্শকদের চোখে। আর এই ম‍্যাজিক এবং এই জুটির প্রতি ভালোবাসা কিন্তু প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সঞ্চারিত হয়েছে, যেমন এই জুটির একনিষ্ঠ ভক্ত আমার মা, বাবা, তাঁদের থেকে আমি এবং আমার হাসব‍্যান্ড সত‍্যজিৎ এবং এখন আমার ছেলে যশজিৎও এই জুটির ছবির ভক্ত।

এটাই ম‍্যাজিক, এটাই আকর্ষণ এই সোনার জুটির। আমি নিশ্চিত যতদিন চলচ্চিত্র শিল্প থাকবে ততদিন সবার উপরে থাকবে এই সোনার জুটি। সকল চলচ্চিত্র প্রেমী মানুষের মনের মুকুরে সোনার অক্ষরে খোদাই হয়ে থাকবে উত্তম-সুচিত্রা জুটির নাম।

 

 

স্বদেশ টাইমস : আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। আমরা নিশ্চিত, এই সাক্ষাৎকার যখন আমাদের পাঠকদের কাছে পৌঁছবে, সেই পুরোনো সুখস্মৃতি গুলি আবার তাদের মনের মণিকোঠায় উঁকি দিয়ে যাবে। আশা করব ভবিষ্যতেও আপনার সহৃদয় সাহায্য আমরা আবার পাব।

 

মৌমিতা : স্বদেশ টাইমস বেশ রুচিশীল একটি পোর্টাল। এই ধরণের কাজে আমার সাহায্য সবসময় পাবেন।

 

স্বদেশ টাইমস : আপনাকে আরও একবার ধন্যবাদ জানাই।


0 comments

Saurav Chakraborty

Saurav Chakraborty

Shared publicly - 26th Mar, 22 10:16 pm

বেশ অন্যরকম উদ্যোগ। খুব ভালো লাগল। চর্চা এগিয়ে চলুক।

RELATED POSTS

Redirect to Address page

Updating Subscription details

Redirecting...Please Wait