সামাজিক
নিয়োগ দুর্নীতিতে অয়ন শীলের (Ayan Seal) যোগের তদন্তে ফের উঠে এল এক যুবতীর নাম। হুগলির (Hooghly) উত্তরপাড়ার বাসিন্দা ইমন গঙ্গোপাধ্যায়। ওই যুবতী অয়ন শীলের ছেলে অভিষেক শীলের বান্ধবী বলেই দাবি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের। ইডির মতে, অভিষেক ও ইমনের যৌথ সংস্থা এবং পেট্রোল পাম্পের মাধ্যমে এসএসসি ও পুর নিয়োগ দুর্নীতির কয়েক কোটি কালো টাকা সাদা করা হয়েছে। তার জন্য অয়ন শীলের নির্দেশে রীতিমতো দক্ষিণ কলকাতার বন্ডেল রোডে অফিস খুলেছিলেন অভিষেক ও তাঁর বান্ধবী ইমন। যদিও অফিস মূলত বন্ধই থাকত। শুধু কিছু চিঠি আসত ওই ঠিকানায়। কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে অয়নের ছেলে ও ছেলের বান্ধবী যে পেট্রোল পাম্প খুলেছিলেন বলে দাবি, সেখানেও হানা দেবেন ইডি আধিকারিকরা। আবার অভিষেক ও ইমনের সূত্র ধরে অয়নের অন্তত চারজন ‘খাস এজেন্ট’-এর সন্ধান পেয়েছে ইডি। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন অয়নের কর্মচারীও ছিলেন। ‘কানুদা’, ‘তপনদা’, এমডি, লাল নামে এই এজেন্টদের মধ্যে কেউ ১৫ জন, কেউ ৪৩, কেউ ৬৮, আবার কেউ বা ৯৬ জন চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তুলে অয়নকে দিয়েছিলেন বলে জানতে পেরেছেন ইডি আধিকারিকরা। বন্ডেল রোডের অফিস সংক্রান্ত নথি ইডি উদ্ধার করেছে।
এদিকে, অয়ন শীলের সল্টলেকের বাড়িতে তল্লাশির আগেই তাঁর এক বান্ধবী তাঁকে সেই ব্যাপারে জানান বলে জেনেছে ইডি। ওই বান্ধবীই অয়নের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী তথা ‘অভিনেত্রী’ শ্বেতা চক্রবর্তী কি না, ইডি তা জানার চেষ্টা করছে। জানা গিয়েছে, অয়নের ওই ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটিতে। মঙ্গলবার তাঁর পরিজনরা জানান, শ্বেতার সঙ্গে অয়নের পরিচয় কর্মসূত্রে। অয়নের প্রযোজনা সংস্থায় কাজ করতেন শ্বেতা। এ ছাড়াও সংস্থার অন্যান্য কাজ দেখতেন ওই সুন্দরী যুবতী। বেশিরভাগ সময় থাকতেন সল্টলেকের এফডি ব্লকে অয়নের অফিস তথা ফ্ল্যাটে।
সম্প্রতি অয়ন শীল ‘কব্বাডি কব্বাডি’ নামে একটি বাংলা সিনেমার প্রযোজনা করেন। পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ওই ছবিটি এখনও অসমাপ্ত। ওই ছবিতে ছোট একটি ভূমিকায় অভিনয় করেন শ্বেতা। এ ছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও অয়ন শীলের সঙ্গে দেখা যেত শ্বেতাকে। ‘কব্বাডি কব্বাডি’ ছবিটি তৈরির ক্ষেত্রে কত টাকা খরচ হয়েছে, তার হিসাব মিলেছে অয়নের সল্টলেকের অফিস থেকে। কোন অভিনেতা ও কলাকুশলীও কত টাকা পেয়েছেন, সেই নথিও উদ্ধার করেছে ইডি। অয়নের অফিস থেকে শ্বেতার যে গাড়িটির নথি উদ্ধার হয়েছে, সেটি নিয়োগ দুর্নীতির টাকায় কেনা কি না, ইডি তাও খতিয়ে দেখছে। যেহেতু শ্বেতা অয়নের সংস্থার কাজকর্ম দেখতেন, তাই তাঁকেও জেরা করতে পারেন ইডি আধিকারিকরা।
বন্ডেল রোডের বাসিন্দা এক প্রৌঢ় জানান, ২০২০ সালের জুন মাসে ওই এলাকার এক দালালের মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন অয়ন শীল। তাঁর ছেলে অভিষেক দিল্লিতে থাকেন। ছেলে অভিষেক ও কর্মচারী তথা এজেন্ট তপনকে সঙ্গে নিয়ে অয়ন শীল বন্ডেল রোডের ওই বাড়ির দেড়তলার ঘর ভাড়া নেবেন বলে জানান। ভাড়ার মাসিক চুক্তি হয় দশ হাজার টাকা। চুক্তিপত্রে সই করার দিন অয়ন তাঁর ছেলে অভিষেক, অভিষেকের বান্ধবী ইমন, ইমনের বাবা ও তপনকে সঙ্গে নিয়ে বন্ডেল রোডে যান। ২০ হাজার টাকা আগাম নেওয়া হয়। তাঁরা জানান, মাঝে মাঝে তাঁরা অফিসে আসবেন ও থাকবেন। ইমন ওই একবারই এসেছিলেন বন্ডেল রোডের বাড়িতে। চুক্তিপত্র তৈরির পর সেই যে অয়ন অফিসঘর তালাবন্ধ করে চলে যান, তার পর আর কেউ অফিস খোলেননি। কিন্তু ওই ঠিকানা ব্যবহার করে অভিষেক ও ইমন ‘ফসিলস’ নামে একটি সংস্থা খোলেন। এর পর ‘শুক্লা সার্ভিস স্টেশন’ নামে একটি সংস্থার নামে পেট্রোল পাম্প খোলেন অয়নের ছেলে ও তাঁর বান্ধবী। ওই সংস্থাগুলির ঠিকানা ছিল বন্ডেল রোডের বাড়ি।
Enter your email address to reset your password.
The very name 'SWADES' denotes the philosophical essence and ideological standpoint of our vision. We envisage serving our 'Swades' by providing news, special stories and literary works of the new generation writers which would cater to the interest of the Nation.
Swades Times © 2020 , All rights Reserved
Comment Box